শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচ তারকা হোটেল ‘জাবির ইন্টারন্যাশনালে’ অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে দগ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত ও ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।

সোমবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এসময় হোটেলের ভেতরে অনেক আটকা পড়েন। হেলিকপ্টারে করে উদ্ধারকারী দল ১৪ তলা বিশিষ্ট হোটেলের ছাদ থেকে কয়েকজনকে উদ্ধার করে। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি দল সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।

সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে যশোর শহরে বিজয় মিছিল বের করে ছাত্র-জনতা। ওই মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ লোকজন চিত্রা মোড়ে অবস্থিত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর শুরু করে। দ্বিতীয় দফায় ৪টার দিকে তারা অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় হোটেলে নিচ থেকে ১২, ১৩ ও ১৪ তলায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘জাবির হোটেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে পাঁচজনের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে আনে ফায়ার সার্ভিসের টিম। এছাড়া একজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। হোটেলে অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ২০ জনের মতো। আহতদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কাজনক।’

এদিকে শাহীন চাকলাদারের হোটেল ছাড়াও তার শহরের কাজীপাড়া কাঠালতলাস্থ বাসভবন, কাজীপাড়াতে যশোর-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদের বাসা, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, শেখ রাসেলের ভাস্কর্যসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

এসময় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কোনো সদস্যকে রাস্তায় দেখা যায়নি। ফোন করলেও কেউ ফোন ধরেননি। এছাড়া চাঁচড়ায় যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিনের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।

সোমবার সন্ধ্যায় যশোরের ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রাশেদ খান বলেন, অনেকদিন ধরে যশোরে আন্দোলন করে আসছি। যশোরে কোথাও সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। আজ আমাদের বিজয়ের দিনে এমন ঘটনা ঘটেছে, সেটি দুঃখজনক। সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসব ঘটনা ঘটায়নি। যারা করেছে, তাদের রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।