জানা গেছে, রিজার্ভ বৈদেশিক মুদ্রার বিক্রির ফলে এখন রিজার্ভ মুদ্রা ৪১ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২০ সালের নভেম্বরের পর সর্বনিম্ন। ২০২০ সালের নভেম্বরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজর্ভ ছিল ৪১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বাজারের চাহিদা মেটাতে সোমবার (১৩ জুন) ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে। এর ফলে রিজার্ভ কিছুটা কমে এসেছে। তবে রফতানি আয় ও রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়লে রিজার্ভ আবারও বাড়বে।
অক্টোবরে পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয় ৭ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। নভেম্বরে তা বেড়ে ৭ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলারে উঠে। ডিসেম্বরে তা আরো বেড়ে ৮ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। জানুয়ারি মাসে ৮ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়েছে। সবশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৮ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার। বিশ্লেষকদের মতে, আমদানি বাড়ার কারণেই রিজার্ভ কমছে। তাছাড়া প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার ধাক্কাও রিজার্ভে পড়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পরপর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা মজুত থাকতে হয়। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির পণ্য আমদানি খরচের হিসাবে বর্তমানের রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনার প্রভাব কাটতে শুরু করায় অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ফলে মূলধনি যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামালসহ সব ধরনের পণ্যের আমদানি বেড়েছে। তাছাড়া করোনার পরে নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে। পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় আমদানি পণ্যের খরচও বেড়েছে। জ্বালানি তেল ও খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে আমদানিতে রিজার্ভ থেকে আগের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ৫৮ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার বা ৫ হাজার ৮৭৭ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছেন দেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তারা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৬ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি।

তাছাড়া রেমিট্যান্স প্রবাহের তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে অর্থাৎ জুলাই থেকে এপ্রিল সময়ে ১ হাজার ৭৩০ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অঙ্ক গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ দশমিক ২৪ শতাংশ কম। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে গত এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্সে গতি ফিরেছে।