প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বেলা তিনটায় গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে মেলা। তবে ছুটির দিনগুলোতে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায়।
অন্যান্য বছর ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে বইমেলা শুরু হলেও এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে তা হচ্ছে মার্চ মাসে।
এবার করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বইমেলায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য সচেতনতায়। মাস্ক ছাড়া বইমেলায় কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। প্রতিটি প্রবেশ পথে এ বিষয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। মাস্ক থাকলে তবেই একজন মেলায় প্রবেশের অনুমতি পাবেন। এরপর তার শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে এবং তা ঠিক থাকলে স্যানিটাইজ করা হবে। সবশেষে নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করে মূল মেলায় ঢুকতে পারবেন লেখক-পাঠক-দর্শনার্থীরা।
এছাড়া মেলার ভেতর ঢোকার পর কেউ যেন মাস্ক না খুলে ফেলে, সে বিষয়টিও নজরদারিতে রাখবে প্রশাসন ও একাডেমি কর্তৃপক্ষ।
বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে হবে এবারের মেলা। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫৪টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮০টি ইউনিট, মোট ৫৪০টি প্রতিষ্ঠানকে ৮৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মেলায় ৩৩টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল মেলা প্রাঙ্গণে। সেখানে ১৩৫টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দের পাশাপাশি ৫টি উন্মুক্ত স্টলসহ ১৪০টি স্টল দেওয়া হয়েছে।
একক ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করেছেন তাদের বই ও বিক্রি/প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে। বইমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। বাংলা একাডেমির ৩টি প্যাভিলিয়ন, শিশু-কিশোর উপযোগী বইয়ের জন্য ১টি এবং সাহিত্য মাসিক উত্তরাধিকার-এর ১টি স্টল থাকবে। এবারও শিশুচত্বর মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রথম দিকে ‘শিশুপ্রহর’ থাকবে না। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মেলায় প্রবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব প্রান্তে এবার নতুন একটি প্রবেশ পথ করা হয়েছে। রমনা প্রান্তে একটি প্রবেশ পথ ও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সবমিলিয়ে সোহরাওয়ার্দীতে ৩টি প্রবেশ পথ ও ৩টি বাহির পথ থাকবে। প্রত্যেক প্রবেশ পথে সুরক্ষিত ছাউনি থাকবে, যাতে বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যে মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। এছাড়া মাস্ক ছাড়া মেলায় প্রবেশ করা যাবে না। শরীরের তাপমাত্রা মেপে স্যানিটাইজ হয়ে তবেই ঢুকতে হবে মেলায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবার নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে।
এবারের মেলায় ঝড়ের আশঙ্কা থাকায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। বৃষ্টি ও ঝড়ের আশঙ্কা বিবেচনায় রেখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪টি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এবার বৃষ্টির পানি মেলা প্রাঙ্গণ থেকে দ্রুত নিষ্কাশণের ব্যবস্থা থাকবে। লেখক বলছি মঞ্চ ও গ্রন্থ উন্মোচনের স্থান বিশেষভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। নামাজের ঘর, টয়লেট ব্যবস্থা সম্প্রসারিত ও উন্নত করা হয়েছে। নারীদের জন্য সম্প্রসারিত নামাজ ঘর থাকবে। পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কাছে একটি ব্রেস্টফিডিং কর্নারও থাকবে। প্রতি বছরের মতো এবারও হুইল-চেয়ার সেবা থাকবে। তবে গতবারের চেয়ে বেশি সংখ্যায় স্বেচ্ছাসেবী এ-কাজে নিয়োজিত থাকবেন। আর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে থাকবে দুটি ফুডকোর্ট।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।