বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজি এবং কয়লার সংকট দূর হচ্ছে। গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি করে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

পেট্রোবাংলার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের শেষ বা আগামী মাসের শুরু থেকে স্পট মার্কেটের এলএনজি সরবরাহ শুরু হবে। এর বাইরে রামপাল এবং পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রর কয়লা সরবরাহ ঠিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার সরবরাহ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে গ্রীষ্মে জ্বালানি সংকট নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এরপর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর জ্বালানি সরবরাহে দুই কেন্দ্রকেই ডলার দেওয়া হয়।

রামপাল এবং পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র বলছে, রামপালে বকেয়া ১৪ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে সাড়ে ১২ মিলিয়ন ডলার এবং পায়রাতে ১৫১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ১২০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়। একইসঙ্গে গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কেন্দ্র দুটির যে জ্বালানি প্রয়োজন হবে তাও দিতে সম্মতি জানানো হয়েছে।

সরকারের তরফ থেকে এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে পেট্রোবাংলার তরফ থেকে বলা হয়েছে স্পট মার্কেট থেকে ৮ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। যা দিয়ে গ্রীষ্মের চাহিদা মেটানো হবে। সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি এলএনজি আমদানির ক্রয় প্রস্তাব ইতোমধ্যে অনুমোদন করেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দাম বেড়ে যাওয়াতে গত বছরের শেষ দিকে সরকার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ করে দিলে দেশে জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। এতে বিদ্যুতে শিডিউল লোডশেডিং করা হয়। সরকারের তরফ থেকে এক ঘণ্টা লোডশেডিং এর কথা বলা হলেও প্রকৃত লোডশেডিং তার চাইতে বেশি হয়েছে।

এখন প্রতিদিন ৪৫০ থেকে ৪৮০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজিকে গ্যাসে রূপান্তর করে সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সরবরাহ যদি প্রতিদিন আরও ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি করা যায় সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ অন্তত ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি করা সম্ভব। প্রতি ১০০ মেগাওয়াট কমবাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রর ২৪ ঘণ্টার জন্য ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। সেই হিসিবে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট অতিরিক্ত গ্যাস সরবরাহ করলে প্রতিদিন আরও ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।

এর বাইরে কয়লা চালিত দুটি কেন্দ্র থেকে (পায়রা এবং রামপাল) ১৭৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এরমধ্যে পায়রা থেকে ১২৪৪ মেগাওয়াট আর রামপাল থেকে কমপক্ষে ৫০০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও মার্চ থেকে আদানির বিদ্যুৎ আসার কথা। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট থেকে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।