রাজধানীর বিআরবি হাসপাতালে  শনিবার (১১ নভেম্বর)  চিকিৎসাধীন অবস্থায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।

উপাচার্যের  মৃত্যুতে তিন দিনের (শনিবার থেকে সোমবার) শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।  এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

দুপুর ১২ টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিজ্ঞান ভবন চত্বরে তাঁর প্রথম জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার, শিক্ষক, কর্মকর্তা,, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেন।
এরপর ক্যাম্পাসের শহিদ মিনার চত্বরে তাঁর প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, নীলদল, কর্মকর্তা সমিতি, কর্মচারী সমিতি, সহায়ক কর্মচারী সমিতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর দ্বিতীয়  জানাযা  দনামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর, তাঁর মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে আরেকটি জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় পরবর্তিতে তাঁর মরদেহ রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়

গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হকের ক্যান্সার ধরা পরে। উন্নত চিকিৎসার জন্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক গত ১২ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে যান। সেখানে তাঁর রেডিও থেরাপি সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তিনি গত ১২ অক্টোবর দেশে ফিরে আসেন।
উল্লেখ্য, ড.মো. ইমদাদুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং তিনি ২০২১ সালের ১ জুন চার বছরের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। অধ্যাপক ইমদাদুল হকের জন্ম পাবনা জেলায়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৯৭৮ সালে এমএসসি এবং ১৯৮৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি একাধিক পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেছেন। তিনি স্ত্রী এবং এক কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে যান।

তিনি ঢাবির জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও সদস্য, বাংলাদেশ উদ্ভিদবিজ্ঞান সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ফর প্ল্যান্ট টিস্যু কালচার অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একাধিক পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবেও ভূমিকা রেখেছেন। দেশ-বিদেশে বিভিন্ন জার্নালে তার ৮০টির বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া তিনি একাধিক বইয়ের সহ-সম্পাদক ছিলেন।