পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় প্রধান শিক্ষক নেই ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ২৯টি পদ শূন্য রয়েছে সহকারী শিক্ষকের। সরাসরি নিয়োগ না থাকায় পদগুলো শূন্য হয়ে আছে। এসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকরা (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি স্কুল পরিচালনা করছেন। সে ক্ষেত্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কাজ এবং পাঠদান করাতে অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা যায়।

উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, ভাঙ্গুরা উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে যার মধ্যে ৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। তবে প্রধান শিক্ষক নেই ২৩টি বিদ্যালয়ে। আর সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ২৯টি। এসব বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন।

শিক্ষক সংকটের বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শোনা যায়, সহকারী শিক্ষক না থাকলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককেও দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি অনেক ক্লাস নিতে হয় তাদের। আবার প্রধান শিক্ষক না থাকলে সহকারী শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।

তারা আরও জানান, প্রধান শিক্ষিকের দাফতরিক যে কাজগুলো রয়েছে তাতে কাজগুলো এখন আমাদের অনেক বেশি চাপ সৃষ্টি করছে৷ এতে দাপ্তরিক কাজ করতে গিয়ে ক্লাস করাতে পারেন না ঠিকমতো। তারা বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান কার্যক্রম অনেকটা ব্যাহত হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খুদে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক শূন্যতার কারণে প্রশাসনিক কার্যক্রমও কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা যায়।

উপজেলার পরমানন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুজ্জামান সবুজের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের স্কুলে একজন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি আমাকেও সম্পূর্ণ পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ৪ জন শিক্ষক মিলে পাঠদান করাতে আমরা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি আমরা। এ বিষয়ে আরও প্রশ্ন করলে তিনি জানান, যদি শূন্যপদগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে এসব সমস্যা কেটে যাবে।

ডাউনলোড করতে ট্যাপ করুন

ময়দানদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক আল-মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছি। এ ছাড়াও বিদ্যালয়ে একজন সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে। দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন আমাকে ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে আমি এতই হিমশিম খাচ্ছি যে, ঠিকমতো ক্লাস নেব নাকি দাফতরিক কাজগুলো করব।

তিনি বলেন, এদিকে আমি যদি ক্লাস ঠিকমতো নিতে যাই তাহলে দাফতরিক কাজগুলো করা হয় না। আবার যদি দাফতরিক কাজ করতে যাই তাহলে আবার ক্লাস ঠিকমতো নিতে পারি না। বিদ্যালয়ে সরকারি নিয়োগ দিলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

এসব বিষয় নিয়ে উপজেলার স্থানীয়রা বলেন, আমরাও শুনেছি শিক্ষক সংকট রয়েছে আমাদের অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ কারণে হয়তো ছাত্রছাত্রীদের পাঠদানে তারা ব্যাহত হচ্ছেন। দ্রুত এ শূন্য স্থানে সরকারি নিয়োগ দিলে হয়তো এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাইলে ভাঙ্গুড়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ সময় সংবাদকে বলেন, ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ২৩টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও ২৯টি সহকারী শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। বিষয়টি চিঠি দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। চলতি মাসে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ায় কথা রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ হলে আশা করি তখন এই সংকট কেটে যাবে।