কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি শিক্ষার্থীদের, সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। চলমান করোনা পরিস্থিতি দেশের অন্য সব প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে তীব্র সেশনজট, হতাশা, মানসিক চাপ সহ নানার সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে না দিলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো। প্রয়োজনে রাজপথ ছাড়বো না, পুরো ঢাকা শহরকে অচল করে দেয়া হবে। আমাদের সাথে এমন অবহেলা সহ্য করা হবে না।
সোমবার (২৪ মে) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে সারাদেশে একযোগে মানববন্ধন করছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি যে করেই হোক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। করোনায় দোহাই আর চলবে না।
এসময় শিক্ষার্থীরা “অনলাইন শিক্ষা মানি না, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ মানি না”, “দাবী মোদের একটাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা চাই।” “শিক্ষার অধিকার ফেরত চাই, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা চাই”, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিন, না হয় গলা দড়ি দিন”- বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
তাদের দাবি, দ্রুত ক্যাম্পাস ও হল খুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান কার্যক্রম স্বাভাবিককরণ, স্বশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ, স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রহণ। এসব দাবি ছাড়াও আন্দোলনকালে তারা আরও বেশ কিছু দাবি পেশ করেছেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে দেশের প্রায় সবকিছু স্বাভাবিক নিয়মে চলছে। অনলাইন ক্লাসে অনেক শিক্ষার্থীই অংশগ্রহণ করতে পারেনি। অনলাইনে পরীক্ষা নিলেও অনেক শিক্ষার্থী ইন্টারনেটের গতিসহ নানা কারণে বিপাকে পড়বে বলেও জানান আন্দোলনারীরা।
মানববন্ধনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দীর্ঘ দিন ধরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে আমাদের শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে। দেশের সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, কারখানা তো বন্ধ নেই। গণপরিবহন ও বন্ধ নেই তাহলে কেনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ থাকবে? শুধু কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই করোনা আছে?
শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে দাবি উত্থাপন করে বলেন, অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হোক। আমরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছি। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে আশ্বাসেই সব সীমাবদ্ধ। আমাদের বয়স বেড়ে যাচ্ছে। যেখানে গণপরিবহন চলে, গার্মেন্টস চলে, মার্কেট খোলা, সবকিছুই চলচে আপন গতিতে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে করোনার কথা বলে বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা অতি দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবী জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার। এরপর কয়েক ধাপে ছুটি বাড়ানো হয়। এছাড়া পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী রোববার (২৩ মে) থেকে স্কুল, কলেজ এবং সোমবার (২৪ মে) থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা থাকলেও ফের আগামী ২৯ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সময়ও জানায় সরকার। স্কুল ও কলেজ ২৩ মে আর বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার কথা জানানো হয় ২৪ মে। তবে মার্চের শুরু থেকে করোনার সংক্রমণ আবার বেড়ে চলায় সে পরিকল্পনাও ভেস্তে যায়। আগে বিশেষ বিবেচনায় কওমি মাদ্রাসা চালুর সুযোগ করে দেয়া হলেও সেটিও বন্ধ করে দেয়া হয় এবার।
সরকার জানিয়েছে, ছুটির সময়টাতে নিজেদের ও অন্যদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসস্থানে অবস্থান করবে। পাশাপাশি অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। তবে তার আগেই যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে তাহলে ভ্যাকসিন চলাকালেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।