রাকিব রিফাত,ইবি প্রতিবেদক: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) কর্মকর্তা সমিতির সভাপতিকে হামলার চেষ্টা ও তুলে নিতে গিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের একাংশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলেন ইবি কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটি এম এমদাদুল আলম। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের নেতৃত্বে এ হামলার চেষ্টা হয় বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বেশকয়েকজন নেতাকর্মী আমার উপর হামলার চেষ্টা করে এবং আমাকে খুবই খারাপভাবে লাঞ্ছিত করে। সে সময় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় সেখানে উপস্থিত ছিলো এবং তার সামনেই আমাকে লাঞ্ছিত করা হয়। এসময় আমি তাকে ডাকলে সে আমার কথা শুনেনি সুতরাং তার নেতৃত্বেই এটি সংঘটিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন নিষ্পেষিত, নিপিড়ীত ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পক্ষে কথা বলেছেন, সংগ্রাম করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষে আন্দোলন করায় বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব বাতিল হয়েছিলো। অথচ তারই হাতে গড়া সংগঠন ‘ছাত্রলীগের’ দাবিদার কিছু নেতাকর্মী আমার উপর হামলার চেষ্টা চালায় এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে প্রক্টর উপস্থিত থাকার পরেও কোন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
এর আগে, ইবি কর্মকর্তা সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। কর্মকর্তাদের ১৬ দফা দাবি আদায়ে এ আন্দোলন গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে চলমান রয়েছে। এরমধ্যে প্রশাসন ভবনের নিচতলায় হিসাব বিভাগের আসাদুজ্জামান মাখন নামে এক কর্মকর্তা ও হিসাব শাখার পরিচালক জাকির হোসেন হিসাব বিভাগ সংশ্লিষ্ট কাজ চালিয়ে গেলে তাদেরকে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটি এম এমদাদুল আলম নিষেধ করেন৷ এসময় তারা বলে প্রশাসনের নির্দেশে তারা কাজ করছেন। তখন এটি এম এমদাদুল আলম বলেন, প্রশাসন তো কাজ দিবেই, আমাদের সমিতিরও তো একটি নির্দেশনা রয়েছে।
এসময় কর্মকর্তা আবদুল হান্নান, মীর জিল্লুর রহমান, মীর মোর্শেদুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম, আব্দুস সালাম সেলিম, আসাদুজ্জামান মাখন, আসাদুজ্জামান, জাহিদুল ইসলাম ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের বাবা তোবারক হোসেন বাদল সেখানে উপস্থিত হন এবং জোর গলায় কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে বলে অভিযোগ করেন কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি এটিএম এমদাদুল আলম।
এটিএম এমদাদুল আলম আরো অভিযোগ করেন, সে সময় তারা বাকবিতন্ডা শুরু করলে সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন এবং অকথ্য ভাষায় তাকে গালিগালাজ করে এবং তুলে নিয়ে মারার হুমকি দেয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলেন সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়, শাহিন আলম, বাধন, বিপুল হোসাইন খান ও হোসাইন মজুমদারসহ আরো ২০-২৫ জন।
কর্মকর্তা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর মোরশেদুল ইসলাম বলেন, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি ফাইল স্বাক্ষর করার কারণে হিসাব পরিচালককে ঘুষি মারতে গিয়েছিল। আমরা সেখানে পরিস্থিতি শান্ত করতে গেছিলাম। পরে আমরা কোন ঝামেলা করিনি।
হিসাব শাখার পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি আমাকে কাজ থেকে বিরত থাকতে বললে আমি প্রশাসনিক নির্দেশে কাজ করেছি বলে জানাই। এর একপর্যায়ে অন্য কর্মকর্তারা ঢুকলে সেখানে বাকবিতন্ডা হয়।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি নাসিম আহমেদ জয় বলেন, তারা যে অভিযোগ তুলেছে আমাদের বিরুদ্ধে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। শিক্ষার্থীদের সাথে কোন বিষয়ে ঝামেলা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে অনেক পরে গিয়েছিলাম।
এ বিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমার কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।