জানা গেছে, গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষা ২০২৩-২৪ উপলক্ষে ইবি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইউনিট সমন্বয়কারী অফিস ও ভর্তির সকল কার্যাদি সম্পাদনের কন্ট্রোল রুম সংশ্লিষ্ট ভবনে রাত আটটার পর উক্ত ইউনিটের কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
বিশ্বদ্যিালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ঝিনাইদহ আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার ফজলুল হক আইসিটি বিভাগের প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে এবং কুষ্টিয়া আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার আলতাফ হোসেন ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু শিবলী মো. ফতেহ আলীর বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ করেন।
অভিযোগে বলা হয়, গত ২৬ এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় প্রফেসর ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে এবং রাত ১১টায় ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী অনুষদ ভবনে প্রবেশ করেন। ভবনে প্রবেশ করতে গেলে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যরা তাদেরকে প্রবেশ না করার অনুরোধ করলেও আনসারদের কথা অমান্য করে তারা প্রবেশ করেন। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত অমান্য করে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। এমতাবস্থায় জরুরী নিরাপত্তা দায়িত্ব পালন তাদের পক্ষে কষ্টসাধ্য ও ঝুকিপূর্ণ বলে লিখিত অভিযোগে দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ বলেন, বই রিভিউ করতে রেফারেন্স দরকার তাই সেদিন আমি আমার চেম্বারে বসে বই রিভিউ করছিলাম। সন্ধ্যার পর থেকেই আমি ওই দিন কাজ করতে ছিলাম। কিন্তু নিউজ বলছে ১১টার সময় ঢুকেছি এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা। যখন আনসার আমাকে রুমে থেকে বেরিয়ে যেতে বলছে আমি তখন প্রক্টরে কে কল করি এবং আমার কাজের কথা বলি। তখন সে আমাকে বলেছিলো আচ্ছা ঠিক আছে আপনি আপনার কাজ করেন। কিন্তু সে এখন অস্বীকার করছে। এখন যে মৌখিক বিজ্ঞপ্তির কথা বলছে যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। পরীক্ষার আগের রাতে রুমে প্রবেশ করা যাবে না এমন কথা আগে বলেনি। এমনি আমাদের ভর্তি পরীক্ষার মিটিংয়ে ও বলেনি।
এদিকে নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম (সেলিম) ও অভিযোগকারী পিসি আলতাফ হোসেনকে তাদের পদ থেকে অপসারণ দাবি করে রেজিস্ট্রার বরাবর পাল্টা লিখিত অভিযোগ করেন সহযোগী অধ্যাপক আবু শিবলী মোঃ ফতেহ আলী চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) বরাবর এ লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগ পত্রে তিনি বলেন, অনুষদ ভবনে আমার রাত ১১ টায় প্রবেশের অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সেদিন আমি সন্ধ্যার পর থেকেই আমার কক্ষে কাজ করছিলাম। ভবনে প্রবেশের সময়ে আনসার সদস্যরা আমাকে নিষেধ করেনি। তাছাড়া আমি নিজেও এই ভর্তি পরীক্ষা কমিটির একজন সদস্য।
আমার রুমে কাজ করার সময়ে এক আনসার এসে বলেন যে ‘প্রক্টর স্যার আপনাকে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে বলেছেন।’ পরে প্রক্টরের কাছে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন ‘আমি কাউকে বলিনি আপনি রুম থেকে বেরিয়ে যান।’ এসময় প্রক্টরকে আমার রুমে অবস্থানের কারণ জানালে সে তা কন্টিনিউ করতে বলেন। তখন ঐ আনসার সদস্য জানান তাকে নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম পাঠিয়েছেন। প্রক্টর আমাকে রুম থেকে বের হওয়ার জন্য না বললেও তার কথা উল্লেখ করে নিরাপত্তা কর্মকর্তা আনসার সদস্যকে দিয়ে এ কাজটি করিয়েছে যা তার এখতিয়ার বহির্ভূত। এছাড়াও লিখিত অভিযোগে, নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম (সেলিম) ও অভিযোগকারী পিসি আলতাফ হোসেনকে তাদের পদ থেকে অপসারণ দাবি করেন।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেমিলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি।
রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, অভিযোগ পত্রটি পেয়েছি। এখন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শনিবারে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।
প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার আগের রাতে ভবনে প্রবেশ নিষেধ ছিল। তবুও ওই শিক্ষকরা ভবনে প্রবেশ করেছিল। পরে ২৭ এপ্রিল আনসারদের অভিযোগসহ নিরাপত্তাকর্মকর্তা আমাকে একটি নোট পাঠায়। আমি এটিকে রেজিস্ট্রার বরাবর প্রেরণ করেছি। কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।