সুসভ্য নাগরিক ও আমরা

নাগরিক কোলাহলে

নিজের প্রতিধ্বনি শুনিনি

কখনও

চারদিকের চিৎকারের

বিকট শব্দে বধির হয়েছে

শ্রবণেন্দ্রিয়।

প্রেমিকের সাথে

প্রেমিকার কথা হয় চোখের ইশারায়।

সেদিকে খেয়াল রাখে

অহেতুক কিছু লোক।

আমাদের তাকানোর

সময় নেই৷

তাদের চোখের ভাষা

বুঝবার শক্তি নেই।

আমরা যা বুঝি-পথিকের

শ্রান্ত চোখের ভাষা।

আমরা যা বুঝি-

বোহেমিয়ানের উদাস ভাষা।

পথের ধারে শুয়ে থাকা

অরক্ষিত রক্তের

সম্পর্কের বাইরের

ভাইয়ের ভাষা।

আমরা যা বুঝি- একটি

শিশুর একবেলা

আহারের তরে হাতে

থাকা ফুলের তোরার

ভাষা,

যে ভাষা বলে ঐ হাতে

ফুল নয় থাকত কলমের

ভাষা ৷

নাগরিক কোলাহলে

নিজের প্রতিধ্বনি শুনিনি

কখনও।

এখন যা শুনি তা হচ্ছে

বৃদ্ধাশ্রমে থাকা এক বাবা,

এক মায়ের ফুঁপিয়ে

উঠার শব্দ ৷

এখন যা শুনি তা হচ্ছে

অনাথের অশ্রু ঝড়ে

পরার শব্দ৷

আর বিশেষভাবে যা শুনি

তা হচ্ছে নিপীড়িত

জনতার মৌন মন ও

মস্তিষ্কের শব্দ ৷

আমাদের শব্দের

শ্রাব্যতার সীমা এতই

বেশি যে তাদের বুঝবার

ক্ষমতা থাকলো না ৷

যেমন অন্য কেউ বুঝে

না প্রেমিক আর

প্রেমিকার চোখের শব্দ।

আর এভাবে এই সভ্যতার

কাছে একদিন আমরাও

মূক হয়ে গেলাম।

 

কবি, নুর আলম সিদ্দিক

শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।