কালজয়ী চলচ্চিত্রকার ও কথাশিল্পী জহির রায়হানের চলে যাওয়ার দিন আজ রোববার। ১৯৭২ সালে ৩০ জানুয়ারি বড় ভাই সাংবাদিক শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের সন্ধানে বেরিয়ে আর ফিরে আসেননি তিনি। গুণী মানুষটার চলে যাওয়ার ৫০ বছর হলেও আজও তার খোঁজ মেলেনি। মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের হাতে মিরপুরে তিনি শহীদ হন বলে পরে জানা যায়।
যদিও মৃতদেহ পাওয়া যায়নি।
দিবসটি উপলক্ষে পারিবারিকভাবে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে জহির রায়হানের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা, প্রামাণ্যচিত্র ও তার নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
জহির রায়হানের জন্ম ১৯৩৫ সালের ৫ আগস্ট ফেনীর মজুপুর গ্রামে। তার নির্মিত ‘জীবন থেকে নেওয়া’ চলচ্চিত্র মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যার প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’ নির্মাণ করে সাড়া ফেলেন তিনি।
তিনি চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন ১৯৫৭ সালে। নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কখনো আসেনি’। এ ছাড়াও ‘বাহানা’, ‘বেহুলা’, ‘আনোয়ারা’, ‘জীবন থেকে নেয়া’ তা নির্মিত কয়েকটি আলোচিত চলচ্চিত্র। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত ২০ মিনিট দৈর্ঘ্যের প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘স্টপ জেনোসাইড’ আজও ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী।
তার সাংবাদিক জীবন শুরু হয় ১৯৫০ সালে ‘যুগের আলো’ পত্রিকায়। ১৯৫৬ সালে তিনি সম্পাদক হিসেবে ‘প্রবাহ’ নামের একটি পত্রিকায় যোগ দেন।
তার প্রথম গল্প ‘সূর্যগ্রহণ’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি তার অন্যতম ও জনপ্রিয় উপন্যাস। এ ছাড়া রয়েছে- শেষ বিকেলের মেয়ে, আরেক ফাল্গুন, বরফ গলা নদী, আর কত দিন, তৃষ্ণা ইত্যাদি। তিনি তার সাহিত্যজীবনে অনেক পুরস্কার পান। জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাস ১৯৬৪ সালে ‘আদমজী পুরস্কার’ পায়। ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে বাংলা উপন্যাসে অবদানের জন্য তাকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (মরণোত্তর) দেওয়া হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।