রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী গোলাম মুস্তাক শাহরিয়ারের মৃত্যু ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে হামলার ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছে দুই প্রশাসন।

শনিবার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাতে রাবি ও রামেক প্রশাসনের দাখিল করা অভিযোগকে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশ।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) রামেকে হামলার অভিযোগ তুলে রাবির তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দেন। রামেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে নগরীর রাজপাড়া থানায় এই অভিযোগ দেন। তবে অভিযোগে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

এরপর শনিবার (২২ অক্টোবর) রামেক হাসপাতালে চিকিৎসক, ইন্টার্ন চিকিৎসক, নার্স ও আনসার কর্তৃক রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে লিখিত অভিযোগ দেয় রাবি প্রশাসন। তারা ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে এই অভিযোগ দায়ের করেন। রাবি রেজিস্ট্রার প্রফেসর আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিতে ওই অভিযোগে রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

রোববার (২৩ অক্টোবর) সকালে তাদের অভিযোগ মামলা হিসেবে গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল আলম।

তিনি জানান, রাবি ও রামেক প্রশাসনের দায়ের করা অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ইতোমধ্যে তদন্তকাজ শুরু করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে সেই অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত,বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে রাবির হবিবুর রহমান হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে আহত হন মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার।পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ৪০ মিনিট বিলম্বে এসে গুরুতর আহত রাবি শিক্ষার্থীকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রামেক হাসপাতালের ওয়ার্ড ও পরিচালকের কক্ষের সামনের অংশে ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকরাও শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করেন রামেকে কর্মরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

পরে হামলাকারীদের গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়ে শুক্রবার সকালে কর্মস্থলে ফিরেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতার না করায় ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ ও চিকিৎসকরা শনিবার এবং রবিবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।সোমবারও কর্মবিরতি ঘোষণা করেন তারা।