সংগীত জগতকে বিদায় জানালেন ‘বাবা মানে হাজার বিকেল’ খ্যাত জনপ্রিয় ইসলামী সঙ্গীতশিল্পী জাইমা নূর। গত ১ জুলাই সন্ধ্যায় একটি ইউটিউব চ্যানেল আয়োজিত লাইভ অনুষ্ঠানে এসে জাইমা নিজেই এ ঘোষণা দেন। গানের ভুবনকে বিদায় জানানোর সময় ভক্ত-অনুরাগীদের আবু তাহের বেলাল রচিত একটি গান শোনান জাইমা।
তার সেই গানের কথাগুলো হলো – ‘সময়ের ঝরা পাতা ঝরে যাবে যে/তোমাদের মাঝে আর গাইব না গান/প্রাণ খুলে তুলব না আর কোনো সুর/তারপর পৃথিবীতে বাঁচি যতদিন/বারুদে বারুদ ঘষে অবসাদহীন’। তার ওই গানটিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
গানের ভুবন কেন ছেড়ে দিলেন – লাইভ অনুষ্ঠানে এমন প্রশ্নের জবাবে জাইমা নূর বলেন, ‘আমি গান গেয়েছি আল্লাহর জন্য। আর এই অঙ্গন থেকে বিদায়ও নিচ্ছি আল্লাহর জন্য। মন খারাপ করার কিছুই নেই। আমি যা করেছি, করছি সবই আল্লাহর খুশির জন্য। তবে আমি এই পরিসর থেকে বিদায় নিলেও আমি যেন আজীবন আপনাদের দোয়া নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারি।
আগামী জীবনে যেন ভালো কিছু করে দেখাতে পারি। আমার জন্য, আমার পরিবারের জন্য ও এই সংস্কৃতিকে যারা এগিয়ে নিচ্ছেন তাদের জন্য দোয়া করবেন। সাক্ষাৎকার শেষে প্যানভিশন টিভি নামের ওই ইউটিউব চ্যানেলের পক্ষ থেকে জাইমা নূরকে আজীবন সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়।
এদিকে জাইমা নূরের এই বিদায়ে এক আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন শিল্পী সুরকার ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সাইফুল্লাহ মানছুর। তিনি বলেন, মেয়ে শিল্পীদের নিয়ে কাজে বেশ সতর্ক থাকতে হয়। আবার এদের নিয়ে অনেক দূর যাওয়াও যায় না। ইসলামী বিধিবিধান অনুসরণ এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
জাইমা নূরের বাবা-মা এ বিষয়ে খুবই সচেতন। ওর লাইভ গানগুলো পরিবেশন করা থেকে সে এখন বিরত থাকবে। জাইমা ৫ম শ্রেণি ফাইনাল পরীক্ষা দিয়েছে। নিজ ক্লাসেও ফার্স্ট হয়। সামনের দিনগুলোতে লেখাপড়ার প্রতি সে আরও গুরুত্ব দিবে। মেয়েদের মাঝে জাইমা আরো ব্যাপক কাজ করবে ইনশাল্লাহ।
জাইমার কণ্ঠের প্রশংসায় তিনি বলেন, আমার চারদশকের বেশি ইসলামী গানের সময়কালে দেখা সেরা ক্ষুদে শিল্পী জাইমা নূর। আমার প্রিয় কিছু সুর করা গান ও গেয়েছে। জাইমার প্রায় প্রতিটি গানই দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। ওর গানে একটা নিজস্ব স্টাইল আছে। তার ওপর ভিত্তি করে জাইমার বড় ধরনের ফ্যান-ফলোয়ার তৈরি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ক্ষুদে শিল্পী জাইমা নূর বেশকিছু জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। তার কণ্ঠে সর্বাধিক জনপ্রিয় গানটি ‘বাবা মানে হাজার বিকেল আমার ছেলেবেলা’। তাসনীম সাদিয়ার লেখা ও সুর করা ওই গানেই তুমুল জনপ্রিয়তা পায় এ শিশুশিল্পী। আলোচিত ওই গানটি এর আগে গানের মূল স্রষ্ট্রা তাসনীম সাদিয়া নিজেও গেয়েছেন।
তবে তার কণ্ঠে ওই গানটি তেমন আলোচনায় আসতে পারেনি। ২০২১ সালের মাহে রমজানে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল আয়োজিত ‘পবিত্র কোরআনের আলো’ অনুষ্ঠানে অতিথি শিল্পী হিসেবে গানটি গান জাইমা নূর। তার গাওয়া গানে উপস্থিত বিচারকরা অঝরে কেঁদে ফেলেন। গানটির শ্রোতা এখন পর্যন্ত কয়েক কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।