আলমগীর হোসেন: খাগড়াছড়ি ডাক্তার চেম্বারে বসে যখন মোবাইল ফোনে ব্যস্ত, হাসপাতালের ঝাড়ুদার তখন ডাক্তারি কাজে ব্যস্ত। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারের অবহেলায় জিয়াউল হক মোল্লা (৬৫) নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (৩রা নভেম্বর) বিকাল ৪ টায় এ মাটিরাঙ্গা সদর হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

জিয়াউল হক মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ০৮ নং ওয়ার্ডের মুসলিম পাড়া এলাকার বাসিন্দা নিহতের বড় ছেলের দাবী ঝাড়ুদার অক্সিজেন লাগাতে ব্যর্থ হওয়ায় তার বাবার মৃত্যু হয়েছে অবহেলায় না করে সঠিক সময়ে ডাক্তার চিকিৎসা সেবা ও অক্সিজেন লাগালে হয়তো তার বাবা প্রাঁণে বেঁচে যেত।

এঘটনায় নিহতের স্বজন এলাকাবাসী হাসপাতালে ডাঃ খায়রুল আলম ও ডা দীপঙ্কর কে এক ঘন্টা রুমে অবরুদ্ধ করে রাখে এক পর্যায়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ ও সেনাবাহীনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।

জানাযায়, নিহত জিয়াউল হক( ৬৫) বড় ছেলে আল- আমিন ও ভাগিনা সাফায়েত উল্ল্যাহ শ্বাস কষ্টের কারণে হাসপাতালে নিয়ে আসে তখন হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ ছিলেন উপ সহকারী মেডিক্যাল অফিসার দীপঙ্কর ধর।

কর্তব্যরত এ চিকিৎসক রোগীকে মাক্স পরিধান ব্যাতিত চিকিৎসা সেবা দিতে অস্বীকৃতি জানায় এছাড়াও তিনি রোগীকে কোন প্রকার চিকিৎসা সেবা না দিয়ে মোবাইল ফোনে ব্যাস্ত থাকায় হাসপাতালের ঝাড়ুদার ভুবেন জয় ত্রিপুরা (৫৫) কে অক্সিজেন লাগানোর জন্য বলেন। স্বজনরা জানায়,ডাক্তার দীপঙ্কর ধর চেম্বারে বসে মোবাইল ফোনে কথা বলছেন রোগীর স্বজনরা হাজারো আকুতি মিনতি করলেও ডাক্তার মাক্স ছাড়া রোগী দেখবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। অথচ মাক্স পরিধান করেন নি খোদ ডাক্তার নিজেই।রোগীর ভগ্নিপতি মাক্স নিয়ে আসলেও মোবাইল ফোনে ব্যাস্ত ডাক্তার, হাসপাতালের ঝাড়ুদারকে বলা হয় অক্সিজেন লাগাতে ।

এবিষয়ে ঝাড়ুদাড় ভুবেন জয় (৬৫) অক্সিজেন লাগানোর বিষয়টি স্বীকার করেন। অভিযুক্ত ডাঃ দীপঙ্কর ধর বলেন,খুবই ক্রিটিক্যাল অবস্থায় রোগীকে নিয়ে আসার পর হাই-প্রো অক্সিজেন সেট আপ করতে আর প্রেসক্রিপশন লিখার পর চিকিৎসা সেবা শুরু করতে গেলেই রোগীর মৃত্যু হয়। মোবাইল ফোনে কথা বলার বা কর্তব্যহীনতার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা।

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ খায়রুল আলম বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা জরুরি বিভাগের দীপঙ্কর ধর দায়িত্বে ছিলেন ডাঃ সমিতা ধর। বিকেল ৩ টার সময় জিয়াউল হক (৬৫) নামে একজন শ্বাস কষ্টে ও হার্ট ফেলিয়ার রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে আসে এবং ভর্তির পর পরই সে মৃত্যু বরণ করে। চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ সত্য নয়।

উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। দায়িত্ব পালনে গাফেলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক জন ঝাড়ুদার কি অক্সিজেন লাগাতে পারে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় স্থানিয় এলাকাবাসীর ও রোগীর স্বজনরা ডাঃ খায়রুল আলম ও দীপঙ্কর ধর এর শোকজ দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসী ।

মাটিরাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আলী বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্স নিয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। এসময় নিহতের স্বজনসহ চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেছি।