যক্ষ্মা হলো ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি রোগ। যক্ষ্মার জীবাণু যে কেবল ফুসফুসকে আক্রান্ত করে তা নয়, এটি মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোনো অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সংক্রমণ হতে পারে। তবে এই রোগটি বেশির ভাগ ফুসফুসকে প্রভাবিত করে। এই রোগের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রক্ত প্রবাহের সঙ্গে ফুসফুসসহ মস্তিষ্কের কিছু অংশ, গর্ভাশয় ও শরীরের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাড়, হাড়ের সংযোগ, লিম্ফ গ্ল্যান্ড, অন্ত্র, মূত্র ও প্রজনন তন্ত্র, ত্বক ইত্যাদি স্থানে ক্ষয়রোগ হতে পারে। শুরু দিকে সঠিক চিকিৎসা না-করালে যক্ষ্মার ফলে প্রাণহানিও ঘটতে পারে।

যক্ষ্মা যেভাবে ছড়াতে পারে
টিবি সংক্রামক যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই রোগের ব্যাকটেরিয়া রোগীর কাশি, হাঁচি, থুতু ও বড় মুখ খুলে কথা বলার সময় মুখ ও নাক থেকে নির্গত বায়ুর মাধ্যমে অন্য লোকের মধ্যে ছড়ায়। আবার সংক্রমিত পানি ও খাবার থেকেও এটি শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

যক্ষ্মার কারণ
ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে যক্ষ্মা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ক্যানসারও যক্ষ্মার অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত।
শরীরের কোনো অংশ ট্রান্সপ্লান্টের পর যেসব ওষুধ খাওয়া হয়, তার কারণেও যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এই রোগের অন্যতম কারণ।
যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে এই রোগ হতে পারে।
অধিক ধূমপান ও মাদকাসক্তিও যক্ষ্মার একটি কারণ।

যক্ষ্মার লক্ষণ
কাশি, বিশেষত কফ যুক্ত কাশি। যে কাশিতে রক্তও উঠে আসতে পারে।
যক্ষ্মা আক্রান্ত হলে ক্ষুদা কম পায়।
ক্লান্তি ও রাতের দিকে মাঝেমধ্যে ঘাম হয়।
হাল্কা জ্বর থাকে।
জোরে শ্বাস নিলে বুকে ব্যথা হয়।

যক্ষ্মার ঘরোয়া উপায়
কয়েকটি বিষয়ের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখলে এই রোগের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়ে পড়ে। তার জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া। ডাক্তারের পরামর্শে যথাসময়ে চিকিৎসা না করালে, এই রোগ বৃদ্ধি পায়। তবে এই রোগের শুরুতেই কিছু ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে তা সহজেই নিরাময় সম্ভব।

রোজ সকালে দু-তিন কোয়া রসুন চিবিয়ে খান। এমন করলে যক্ষ্মার লক্ষণ কমে।
মধু ও মাখন শরীরের ক্ষয় আটকায়। ১০০ গ্রাম মাখনে ২৫ গ্রাম মধু মিশিয়ে রোজ খান।
খাবার খাওয়ার পর লবঙ্গের গুঁড়োয় মধু মিশিয়ে খেলে সুফল পেতে পারেন।
২৫০ গ্রাম দুধে অশ্বত্থ পাতা দিয়ে ফোটান। সকাল-সন্ধ্যায় সেই দুধ পান করুন।
রসুনের রসের সঙ্গে আধ চামচ মধু মিশিয়ে খান। রসুনের রস ফুসফুসকে মজবুত করে।
যক্ষ্মা রোগীরা প্রতিদিন ১০০ বা ২০০ গ্রাম আঙুর খান।
বেশি বেশি কলা খান। কলা যক্ষ্মা রোগীদের রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

 

 

কলমকথা/ বিথী