টিকার মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ করা গেলে অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব। তাই দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা ডেঙ্গুর টিকা নিয়ে গবেষণা করে আসছেন। টিকা আবিস্কারের চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ। এই চেষ্টায় আশার মুখ দেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের ডেংভ্যাক্সিয়া এবং জাপান কিউডেঙ্গা টিকা।

যুক্তরাষ্ট্রের ডেংভ্যাক্সিয়া ভ্যাকসিন:

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডেঙ্গুর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ব্যবহারের জন্য তৈরি একটি ভ্যাকসিনের নাম ডেংভ্যাক্সিয়া ভ্যাকসিন। দেশটির সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, শুধুমাত্র ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুরা এই টিকা গ্রহণ করতে পারে। তবে এই টিকা শুধুমাত্র সেসব শিশুরা নিতে পারবে যারা ইতিপূর্বে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

শিশুদের পূর্বে ডেঙ্গু সংক্রমণ না থাকলে টিকা দেওয়ার পরে ডেঙ্গু হলে ডেঙ্গু রোগ আরও গুরুতর হতে পারে। মোট ৩টি ডোজে এই টিকা গ্রহণ করতে হয়।

যেহেতু টিকাটি সকল বয়সীদের জন্য নয় এবং শর্ত সাপেক্ষে এই টিকা গ্রহণ করতে হয় তাই ডেংভ্যাক্সিয়া ভ্যাকসিন সেভাবে সার্বজনীন হয়ে উঠতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কিছু এলাকা ছাড়া এর তেমন প্রয়োগ নেই। তবে আশা জাগাচ্ছে সম্প্রতি কয়েকটি দেশে ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়া জাপানের ‘কিউডেঙ্গা’ টিকা।

কিউডেঙ্গা ভ্যাকসিন:

জাপানের টাকেদা ফার্মাসিউটিক্যাল থেকে উদ্ভাবিত কিউডেঙ্গা ভ্যাকসিন ডেঙ্গু পুরোপুরি ভাবে নির্মূল করতে না পারলেও ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো প্রায় ৮০ শতাংশ পর্যন্ত প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরিমাণ কমাতে পারে প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রিয়া,আইসল্যান্ড, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ কিউডেঙ্গা ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। চার বছর বয়স থেকে এই টিকা নেওয়া যায়, তিনমাসের ব্যবধানে দুই ডোজে এই টিকা গ্রহণ করতে হয়। কিউডেঙ্গা ভ্যাকসিন জীবনব্যাপি প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে পারে বলে দাবী করছে টাকেদা ফার্মাসিউটিক্যাল।

তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছেনা ডেঙ্গুর কোনোও ভ্যাকসিন। এশিয়ার ডেঙ্গু প্রবণ দেশ ইন্দোনেশিয়ায় কিউডেঙ্গা ভ্যাকসিনের ব্যবহার শুরু হয়েছে। আমাদের দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির বিবেচনায় এই টিকা দেশে আসতে পারে কিনা সেই বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। এই টিকা দু’টি ছাড়াও ভারতে ট্রায়ালে আছে আরও একটি টিকা।