শেখ শহীদুল্লাহ্ আল আজাদ | খুলনা জেলা প্রতিনিধিঃ খুলনায় করোনাভাইরাসের টিকার সংকট রয়েছে। তবে মজুত টিকা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজের টিকা কার্যক্রম এখন পর্যন্ত চলমান রয়েছে। গত সাত কর্মদিবসে গড়ে প্রতিদিন যে হারে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে, সেভাবে চললে মজুত শেষ হতে আর পাঁচ থেকে ছয় দিন লাগবে। এরপর কী হবে, তা নিয়ে চিন্তিত স্বাস্থ্য বিভাগ।

অন্তত ঈদ পর্যন্ত যেন টিকার কোনো সংকট না হয়, সে জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে টিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত খুলনায় টিকা পাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ২ লাখ ১৪ হাজার ৭৫৪ জন। তাঁদের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪ হাজার ১৩৬ জন আর নারী ৭১ হাজার ৮২১ জন। গত মার্চ মাসের শেষ দিন পর্যন্ত প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছিলেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৭৮ জন।

চলতি এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার সংখ্যা কমতে থাকে। চলতি মাসে মাত্র ৯ হাজার ২৭৯ জন প্রথম ডোজের টিকা পেয়েছেন। আর গত সোমবার থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া একেবারে বন্ধ রয়েছে। খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, খুলনায় গত ৩১ জানুয়ারি প্রথম ধাপে ১ লাখ ৬৮ হাজার ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা আসে।

পরে ৭ এপ্রিল খুলনায় দ্বিতীয় দফায় আরও ১ লাখ ২৫ হাজার ডোজ টিকা আসে। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজের জন্য আসা টিকা মিলিয়ে এখন প্রায় ২৮ হাজার ৯০০ ডোজ টিকার মজুত রয়েছে। ফলে, প্রায় ৬০ হাজার দ্বিতীয় ডোজ টিকা ঘাটতির জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। গতকাল বুধবার পর্যন্ত খুলনা জেলায় ৮৬ হাজার ৫৩৮ জনের দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ৫৪ হাজার ৩১৫ জন আর দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২৩ জন নারী। গত সাত কার্যদিবসে গড়ে প্রতিদিন ৫ হাজার ৪১৫ জন দ্বিতীয় ডোজের টিকা পেয়েছেন।

টিকা কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বাংলাদেশে শুরু থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া হয়েছে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে এই টিকার উৎপাদন হয়েছে। টিকার বিষয়ে বাংলাদেশের বেক্সিমকোর সঙ্গে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে আগে থেকে একটি চুক্তি হয়েছিল। তবে ভারতের করোনা সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করায় নিজেদের চাহিদা বিবেচনা করে ভারত আপাতত টিকা রপ্তানি বন্ধ রেখেছে। চলমান কোভিড-১৯ টিকাদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য অন্য দেশের টিকা আমদানির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে সরকার। টিকার বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনার সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, ‘টিকা সংকট সারা দেশের। আমরা চাচ্ছি খুলনায় ঈদ পর্যন্ত যেন টিকার কোনো সংকট না হয়। অনুমান করছি ১৫ থেকে ২০ হাজার ডোজ হলে ঈদ পর্যন্ত ঝামেলা হবে না।

এ জন্য স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভাগীয় পরিচালকের কার্যালয়ের মাধ্যমে ২০ হাজার ডোজ টিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করছিম, সমস্যা হবে না। টিকা এলে কার্যক্রম চলবে, আর না পেলে টিকা দিতে পারব না। বন্ধ থাকবে। এদিকে গতকাল বুধবার খুলনায় ৪৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

এর মধ্যে ৩৯ জন খুলনা শহরের বাসিন্দা, বাকিরা উপজেলার। শনাক্তের হার ২৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় ৫৫ জন এবং আইসিইউতে ৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন।