ডা. তাসনিম জারা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করা এই শিক্ষার্থী অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়েছেন। সম্প্রতি তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সুপাইরভাইজার (আন্ডারগ্রাজুয়েট) হিসেবে যোগ দিয়েছেন। ডা. জারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই স্বাস্থ্য টিপস শেয়ার করেন। বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেজে তিনি ওজন বাড়ানোর পরামর্শ দেন। যুগান্তরের পাঠককের জন্য তার পরামর্শগুলো তুলে ধরা হলো।
সকালের নাস্তা
ওজন বাড়াতে সকালের নাস্তায় দুধ, কলা, ডিম ও খেঁজুর যুক্ত করতে পারেন।
দুধ: আমাদের শরীরে যত ধরনের পুষ্টি দরকার তার প্রায় সবগুলোই দুধে পাওয়া যায়। প্রচুর ক্যালিসিয়াম আছে যা আমাদের হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। ভিটামি বি১২ আছে যা আমাদের রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। আর দুধের একটি বড় সুবিধা হলো, অন্যান্য খাবারের সঙ্গে সহজে এক গ্লাস দুধ খেয়ে নেওয়া যায়। এটা ওজন বাড়াতে খুব ভালো সাহায্য করবে।
কলা: কলায় ভিটামিন বি৬ আছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় সাহায্য করে। ভালো পরিমাণে ফাইবার আছে যা আমাদের হজমে সাহায্য করে। হার্টের রোগের ঝুঁকি কমানোর সঙ্গেও একটা সম্পর্ক আছে। আবার কলা খুব সহজবোধ্য, বাজারে সব সময় পাওয়া যায়। খাওয়ার আগে কাটাকাটির কোনো ঝামেলা নেই। তাই সকাল রাতে একটা দুইটা কলা খেতে পারেন।
ডিম: ডিমকে অনেকে বলে ‘প্রকৃতির মাল্টিভিটামিন’। এতে ভিটামিন ‘এ’ আছে যা আমাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ভিটামিন ‘বি২’ আছে যা আমাদের ত্বককে ভালো রাখে। ‘জিঙ্ক’ আছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ণ। তাই সকাল সকাল নাস্তার সঙ্গে ডিম সেদ্ধ খেতে পারেন। এটা আপনার ওজন বাড়াতে ভালো সাহায্য করবে। তবে ডিম ভাজি নয়। কারণ অস্বাস্থ্যকর তেল দিয়ে ডিম ভাজলে ক্ষতির কারণে হতে পারে।
খেজুর: এটা একটা অসাধারণ ফল। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম আছে যা হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আইরন আর ফলিক এসিড আছে যা রক্ত তৈরিতে সহায়তা করে। সকাল বেলাতে কয়েকটি খেজুর খেয়ে নিলে শরীর স্বাস্থ্য দুইটারই উপকার হবে।
এগুলো প্রতিদিন খেতে হবে এমন নয়। বুঝে শুনে এর মধ্যে একটি-দুটি খেলে হবে।
দুপুরের খাবার: দুপুরের খাবারে ডাল রাখবেন। পারলে পাতলা ডাল না খেয়ে ঘন ডাল খাবেন। ডাল আমরা হেলাফেলার চোখে দেখলেও এটি খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন আছে। গরুর মাংসে যেমন প্রোটিন আছে তেমন। ডালের নির্দিষ্ট কিছু উপাদান আমাদের নাড়িভুঁড়ির উপকারী জীবাণুর খাদ্য। তাদেরকে সুস্থ্য রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন খাবারে ডাল রাখতে পারেন।
দুপুরের পর টক দই খেতে পারেন। টক দইয়ে অনেক উপকারী জীবাণু থাকে। দুপুরের খাবারে মুরগির মাংস রাখতে পারেন। সাধারণত এক টুকরা খেলে এখন থেকে দুই টুকরা খেতে পারেন।
রাতের খাবার: দুপুরের খাবারগুলো রাতের জন্যও প্রযোজ্য। দুপুরে কাজের ব্যস্ততার জন্য বাইরে থাকার কারণে কিছু মিস হয়ে গেলে তা রাতের খাবারে যুক্ত করার সুযোগ থাকে।
নাস্তা: ওজন বাড়ানোর জন্য যেকোনো ধরণের বাদাম খেতে পারেন। দুপুর-রাতে খাবারের পরেও খেতে পারবেন। কেনার সময় খেয়াল রাখবেন যেন বাদামের সঙ্গে চিনি বা লবন মেশানো না থাকে। বাদামের সঙ্গে কিসমিস খেতে পারেন। এটি ওজন বাড়াতে সহায়তা করবে।
ওজন বাড়ানোর জন্য খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের বিজ যুক্ত করা। মিস্টি কুমড়ার বিজ, সূর্যমুখীর বিজ খেতে পারেন। এছাড়া ওজন বাড়ানোর জন্য ডা. তাসনিম জারা নিয়মিত ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন।
সতর্কতা:
প্রথম সতর্কতা হলো আপনার ওজন বাড়ানো প্রয়োজন কিনা সেটা বুঝা। যাদের ওজন স্বাভাবিকের থেকে কম তাদের ওজন স্বাভাবিকে আনা প্রয়োজন। কারণ, অল্প ওজনে নানাবিধ সমস্যা হতে পারে। কিছু রোগের কারণে ওজন কম হতে পারে। সেই ক্ষেত্রে চিকিৎসা প্রয়োজন। তাই ওজন বাড়ানোর আগে আপনি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
ওজন দ্রুত বাড়ানোর থেকে ধীর গতিতে বাড়ানো ভালো।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।