কারও ওজন অস্বাভাবিক বাড়ছে, পা কিংবা মুখটা ফোলা ফোলা। কোনো নারীর মাসিকে গন্ডগোল হচ্ছে, কিংবা চেষ্টা সত্ত্বেও গর্ভধারণ হচ্ছে না। আবার কোনো শিশু ঠিকমতো বাড়ছে না, পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে—এসব সমস্যার কারণ থাইরয়েডে লুকিয়ে থাকতে পারে।

মানবদেহের সবচেয়ে বড় গ্রন্থির নাম থাইরয়েড। এটি থেকে নিঃসৃত হয় থাইরয়েড হরমোন। বিচিত্র তার কার্যবিধি। বেড়ে ওঠা থেকে শুরু করে দেহের প্রায় সব বিপাক ক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ এবং শরীর-মনের সুস্থতা নির্ভর করে এই হরমোনের ওপর। এর পরিমাণ কম-বেশি হলে প্রভাব পড়ে সারা শরীরে।

বিশ্বজুড়ে থাইরয়েডজনিত সমস্যার হার বেড়েই চলেছে। নারীরা এতে তুলনামূলক বেশি আক্রান্ত হন। থাইরয়েড জটিলতার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় হাইপোথাইরয়েডিজম বা থাইরয়েড হরমোনের অভাবজনিত জটিলতা। এতে ওজন বৃদ্ধি, শরীর ফুলে যাওয়া, মাসিকে অনিয়ম, গর্ভধারণে জটিলতা, ত্বকে শুষ্কতা, চুল পড়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, অকারণ ক্লান্তি, ঘুম ঘুম ভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।

উল্টোটা হয় হাইপারথাইরয়েড বা হরমোনের আধিক্য ঘটলে। এতে ওজন হ্রাস, গরম লাগা ও খুব ঘাম, ডায়রিয়া, বুক ধড়ফড়, হাত-পায়ে কাঁপুনি ইত্যাদি উপসর্গ হয়। থাইরয়েড গ্রন্থিটাই কখনো বড় হয়ে যেতে পারে, যাকে বলে গলগণ্ড বা গয়টার। থাইরয়েড গ্রন্থিতে টিউমার বা ক্যানসারও হয়ে থাকে। সমস্যা যত দ্রুত ধরা পড়ে, চিকিৎসার সুফলও তত বেশি।

চিকিৎসকদের পরামর্শ: ছোট ছোট দৈনন্দিন সমস্যাকেও অবহেলা করবেন না। হতে পারে তা কোনো জটিল রোগের চিহ্ন। গর্ভকালীন মায়ের সামান্য থাইরয়েড সমস্যাও অনাগত শিশুর ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলে বা গর্ভধারণ করলে একবার থাইরয়েড হরমোন পরীক্ষা করিয়ে নিন। থাইরয়েডের যেকোনো সমস্যার চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি এবং বারবার পরীক্ষা করে ওষুধের মাত্রা নির্ধারণ করতে হয়। ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন।