বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে’ অনুযায়ী দেশে প্রতি পাঁচজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক অর্থাৎ ২১ শতাংশ মানুষ উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত। এ কারণে বাংলাদেশ উচ্চরক্তচাপের নীরব মহামারির মধ্যে রয়েছে।

সারা বিশ্বের মতো আজ বুধবার দেশে বিশ্ব উচ্চরক্তচাপ দিবস-২০২৩ পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন’।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, রক্ত চলাচলের সময় ধমনির ভেতরের গায়ে যে পার্শ্বচাপ তৈরি হয়, সেটিকে রক্তচাপ বলে। রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেড়ে গেলে তাকে উচ্চরক্তচাপ বা হাইপারটেনশন বলে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা জানান, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস যেমন-খাদ্যের সঙ্গে অতিরিক্ত লবণ (সোডিয়াম) গ্রহণ, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার এবং তামাক, অ্যালকোহল সেবন উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনও উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসা করা না হলে এটি ধমনি এবং মানবদেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে।

ধমনি শক্ত হয়ে হৃৎপিণ্ডে রক্ত ও অক্সিজেনের প্রবাহ হ্রাস পেতে পারে। ফলে বুকে ব্যথা বা অ্যানজাইনা, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলর এবং হার্ট বিট অনিয়মিত হতে পারে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অর্থাৎ স্ট্রোক এমনকি বিকল হতে পারে।

ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্টস স্কুল অব পাবলিক হেলথের অধ্যাপক ডা. মলয় কান্তি মৃধা বলেন, সবশেষ বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপে দেখা গেছে, ১৮ বছরের বেশি বয়সি মানুষ (২৭ দশমিক ৩ শতাংশ) উচ্চরক্তচাপে ভুগছে।

এ সংখ্যা ২০৩০ সাল নাগাদ গিয়ে দাঁড়াবে ৩ কোটি ৮০ লাখে। কিন্তু আক্রান্তদের ৬৭ শতাংশ জানে না তাদের রোগটি রয়েছে। উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত অধিকাংশ রোগী (৬৪ শতাংশ) কোনো ওষুধ সেবন করে না।

১৪ শতাংশ মানুষের রোগটি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের মাধ্যমে ৭৬ শতাংশ উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এসএম মোস্তফা জামান জানান, উচ্চরক্তচাপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে গাইডলাইন রয়েছে, তা বাস্তবায়ন করতে হবে। সম্মিলিতভাবে কাজ করলে উচ্চরক্তচাপের প্রকোপ মোকাবিলা করা সম্ভব।