ভোট দিতে না যেতে পীর নিষেধ করেছেন। পীর তাদেরকে বলেছেন নারীরা ঘরের বাইরে গেলে পর্দার খেলাপ হবে। তাই পীরের কথা শুনে ১২ হাজার নারী ভোট দিতে যান না। এতে করে স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসেও ইউনিয়নের ১২ হাজার নারী ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।

তবে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষধ নির্বাচনে এলাকার নারীরা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলে আশা করছে প্রার্থীরা সহ স্থানীয় প্রশাসন। ঘটনাটি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে।

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া বাজারের পূর্ব পাশে ষাটের দশকে বসবাস করতেন জৈনপুরের পীর মওদুদুল হাসান। ওই সময় এলাকায় মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে কলেরা-বসন্ত। ফলে মহামারি থেকে রক্ষা পেতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

ওই মাহফিলে পীর মওদুদুল হাসান জানান, নারীদের বেপর্দার কারণেই এ মহামারি। তাই নারীদের কখনোই পর্দার খেলাপ করা যাবে না।

এর কিছুদিন পর ভারতের জৈনপুরে চলে যান পীর মওদুদুল হাসান। স্বাধীনতার পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সুবিধাবাদীরা তাঁর কথার ওপর রং চড়িয়ে প্রচার করেন, নারীরা ভোট দিলে এলাকায় আবারও কলেরা-বসন্ত ছড়িয়ে পড়বে। ব্যস, সেই থেকে আজ পর্যন্ত নারীদের ভোট দেওয়া বন্ধ! ইউনিয়নের পূর্ব ও পশ্চিম কাউনিয়া, চর পক্ষিয়া, চর মান্দারি, উত্তর ও দক্ষিণ সাহেবগঞ্জ, সাহেবগঞ্জ, গৃদকালিন্দিয়া, চর মুঘুয়া গ্রামের নারীরা যুগের পর যুগ ধরে নিজ ইচ্ছায়ই ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকছেন।

ফরিদগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি নুরুন্নবী নোমান একটি গণমাধ্যমকে বলেন, রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নে ১২ হাজার ১১৪ জন নারী ভোটার রয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নের যুগে এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। নারীদের ভোটদান নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি এলাকার শিক্ষিতদেরও ভূমিকা রাখতে হবে।