র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীর জয়যাত্রা টেলিভিশনে কর্মী/সাংবাদিক নিয়োগের নামে চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করতেন। এ ধরনের একটি চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ফোনালাপ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে কুর্মিটোলায় র‌্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, হেলেনা জাহাঙ্গীরের অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টেলিভিশন ষ্টেশন সিলগালা করা হয়েছে এবং অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয়েছে। হেলেনা জয়যাত্রা টেলিভিশনে সাংবাদিক নিয়োগের নামে চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করতেন। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও দেশের বাইরেও প্রতিনিধি নিয়োগ দিতেন। চাঁদাবাজি সংক্রান্ত একটি ফোনালাপ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক বলেন, জয়যাত্রা টেলিভিশনের অফিসে অভিযানে চাঁদাবাজি সংক্রান্ত নথিপত্রও জব্দ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের একজন জেলা প্রতিনিধি চাঁদাবাজি সংক্রান্ত অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে।

জয়যাত্রা টেলিভিশনে নিয়োগের নামে অর্থ প্রদান ও কেউ যদি হয়রানির শিকার হন তাহলে র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও অনুরোধ জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

অভিযানে ১৯ বোতল বিদেশি মদ, একটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া, একটি হরিণের চামড়া, দুটি মোবাইল ফোন, ১৯টি চেক বই ও বিদেশি মুদ্রা, দুটি ওয়াকিটকি সেট এবং জুয়া বা ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। পরে মধ্যরাতে তার জয়যাত্রা টেলিভিশন স্টেশনেও অভিযান পরিচালনা করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মানহানি ও সুনাম নষ্ট করেছেন। এছাড়া তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন। তিনি খ্যাতি লাভের আশায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের বিব্রত করতেন। অনৈতিক পন্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে খ্যাতনামা হিসেবে উপস্থাপন করতে চতুরতার আশ্রয় গ্রহণ করতেন। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তিনি একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ফেসবুক লাইভে এসে অযাচিত ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করতেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা আরও বলেন, অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে মাদার তেরেসা, পল্লীমাতা ও প্রবাসীমাতা হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন হেলেনা। তার পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র এসব ভুয়া খেতাবের অপপ্রচার চালাত। বিভিন্ন দেশি সংস্থা ও ব্যক্তি থেকে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে অর্থ সংগ্রহ করতেন। যা মানবিক সহায়তায় ব্যবহারের চেয়ে গ্রেফতারকৃতের খেতাব প্রচার-প্রচারণায় বেশি ব্যবহার করা হত।

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হেলেনা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা হয়ে নিজের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন। তার প্রায় ১২টি ক্লাবের সদস্যপদ রয়েছে।