বিয়েতে বেঁকে বসা এক প্রেমিকের সঙ্গে অনাথ তরুণীর বিয়ের বন্দোবস্ত করলেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এই যুবকের সঙ্গে তরুণীর দীর্ঘদিন ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু প্রেমিকা যখন বিয়ের জন্য চাপ দেয় তখনই বেঁকে বসে যুবক। এরপর থানায় গিয়ে প্রেমিকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ জানান প্রেমিকা। তারপরই পুলিশের প্রচেষ্টায় রীতিমতো ঘটা করে ওই তরুণীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয় অভিযুক্ত যুবকের। ঘটনা পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কুমেদপুর গ্রামের।

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশের উদ্যোগে রীতিমতো ডিজে বাজিয়ে জাঁকজমক সহকারে কুমেদপুর পুলিশ আউটপোস্টে অনাথ তরুণীর সঙ্গে ওই যুবকের বিয়ে দেন পুলিশ কর্মকর্তারা। খবর এই সময়ের।

স্থানীয় সূত্রের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, ওই তরুণীর নাম সোনা দেবী সিং (২৩)। তার বাড়ি কাঠিয়ার জেলায়। অন্যদিকে যুবকের নাম শঙ্কর সাহানী (২৫)। তার বাড়ি বিহারের দ্বারভাঙ্গা জেলাতে। দুইজনে একটি কুমেদপুর এলাকার ফাঁড়িতে কাজ করতেন। তরুণী দীর্ঘদিন আগে তার বাবা মাকে হারানন। ফাঁড়িতে কাজ করতে করতেই ওই যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। এ সুযোগে ওই যুবক তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দেন। পরে ওই তরুণী শঙ্কর সাহানীকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু অভিযুক্ত যুবক সোনা দেবীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।

এরপরই সোনা দেবী সিং কুমেদপুর ফাঁড়িতে পুলিশ কর্মকর্তাদের দ্বারস্থ হন। সেখানে তরুণীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে থানায় ধরে নিয়ে আসা হয়। তারপরই হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস ও অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্যোগে থানা প্রাঙ্গণে গড়ে তোলা হয় বিয়ের মণ্ডপ। আনা হয় ডিজে ব্যান্ড পার্টি। রীতিমতো মালাবদল করে থানা প্রাঙ্গণে কর্মকর্তাদের সহায়তায় ওই অনাথ তরুণীর বিয়ে দেওয়া হয় অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে। এরপরে স্থানীয় একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে হিন্দুমতে ভগবানকে সাক্ষী রেখে বিয়ে দেওয়া হয়। আর এই নজিরবিহীন ঘটনার ফলে পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।

হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানান, তরুণী থানায় এসে সব ঘটনা জানায়। পিতৃমাতৃহীন ওই তরুণীর পুরো ঘটনা শোনার পর যুবককে নিয়ে আসা হয়। পুরো ঘটনার কথা স্বীকার করে নেন যুবক। তারপরেই থানার উদ্যোগে অনাথ তরুণীর বিয়ের ব্যবস্থা করা হয় পুলিশের তরফে।