ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৯টি চিঠি দিয়ে একটিরও জবাব পাননি পশ্চিমবঙ্গের টানা তৃতীয়বারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২ মে হ্যাটট্রিক করে নির্বাচনে জেতার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ৯টি চিঠি লিখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে একটিরও জবাব আসেনি। এই কারণে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের ওপর চটেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর অফিস নবান্ন।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবর— বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির জবাব দেওয়া তো দূরের কথা, সেই চিঠিগুলোর প্রাপ্তি স্বীকারও করেনি প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়। কেন্দ্রের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ রাজ্যসরকার বলছে— রাজনৈতিক কারণে প্রশাসনিক কাজকর্মের সমস্যা হচ্ছে। অভিযোগ, ভোটের রাজনীতিতে হেরে রাষ্ট্রীয় কাঠামো পরিপন্থি আচরণ করছে দিল্লি। খবরে বলা হয়, তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই গত ৫ মে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখে রাজ্যে অক্সিজেনের অভাবের বিষয়ে জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টিকা, রেমডিসিভির, অক্সিজেন ও অক্সিজেন সিলিন্ডারের সরবরাহ বাড়ানোর দাবি করেন মমতা। এর পর ৬ মে কিষাণ যোজনার বকেয়া মেটানো প্রসঙ্গে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ৭ মে ফের একবার অক্সিজেন সরবরাহের দাবিতে চিঠি লেখেন তিনি। ৯ মে ফের একবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন মমতা। এবার চিঠির বিষয় ছিল— কর প্রত্যাহারের দাবি। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সরকারকে সাহায্য করতে যে অক্সিজেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার, কনসেনট্রেটর, ক্রায়োজেনিক ট্যাংক ও ওষুধ দিতে চাইছে, সেসব জিনিসের ওপর কর প্রত্যাহারের দাবি জানান মমতা। এর পর ১২ মে মমতা টিকার ঘাটতি প্রসঙ্গে চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীকে টিকা আমদানির পরামর্শ দেন। সেই চিঠিতেই আবার টিকার কারখানার জন্য রাজ্যে জমি দিতে চান বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ১৪ মে চিঠি লিখে রাজ্যের হাসপাতালে অক্সিজেন কসেন্ট্রেটর বসানো নিয়ে নালিশ করে হস্তক্ষেপ চান মুখ্যমন্ত্রী। এরপর ২০ মে চিঠি লিখে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের অবিলম্বে ভ্যাকসিন দেওয়ার দাবি তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ২০ লাখ টিকার ডোজ চান তিনি। এরপর ৩১ মে আলাপন কাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী। কলাইকুন্ডায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ নিয়ে বিস্তারিত লেখেন মমতা। তাছাড়া চিঠিতে আলাপনকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানোর ঘোর বিরোধিতা করে সেই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।

এরপর সর্বশেষ চিঠি লেখেন ২৪ জুন। তাতে মমতা লেখেন, কোভ্যাক্সিন টিকাকে যাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্রুত অনুমোদন দেয়, তার জন্যে হস্তক্ষেপ করুক কেন্দ্র।