করোনা পরিস্থিতিতে তাঁতের ব্যবসায় ক্ষতির মুখে পড়েন তিনি। এ ব্যবসা ছেড়ে ইউরোপে প্রবাসী হওয়ায় চেষ্টায় প্রথমে পাড়ি জমান ইউক্রেনে।
সেখানেও কপালের শনি কাটেনি তার। লেগে গেল যুদ্ধ। আর তাতে আয়-উপার্যন তো দূরের কথা, জীবন বাঁচানোই দায়।
রাশিয়ার হেলিকপ্টার থেকে মুহুর্মুহু পড়তে থাকা বোমার ভয়ে নিরাপদ ঠাঁই খুঁজলেন ৬ দিন। ৬ দিনে ৬ রাত কোনো খাওয়া-দাওয়া নেই, বিশ্রাম নেই। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে একসময় প্রাণে বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন।
অবশেষে দেশের বিমানে উঠে যেন বাড়ি নতুন জীবন ফিরে পেলেন তিনি।
বাড়ি ফিরেই যুদ্ধের এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন এক ভারতীয়। তার নাম সমীর বিশ্বাস।
নদীয়ার শান্তিপুর থানার গবারচর এলাকার বাসিন্দা তিনি।
ইউক্রেনে আটকেপড়া ভারতীয়দের উদ্ধারে ‘অপারেশন গঙ্গা’ নামের অভিযানে প্রাণ বাঁচল সমীরের। বৃহস্পতিবার স্বদেশে ফিরেছেন তিনি।
বাড়ি ফিরে উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে সমীর হিন্দুস্তান টাইমসকে জানান, ‘যেদিন যুদ্ধ শুরু হয় আমাদের এলাকার আকাশে দশ-বারোটা হেলিকপ্টার বোমা বর্ষণ করেছিল। আমরা সবাই নিরাপদে সরে যাই। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়। আমরা স্টেশনে গিয়ে কেউ ট্রেনের টিকিট পাইনি। ট্রেনেও উঠতে পারিনি। অনেক টাকা ধার করে ট্যাক্সি ভাড়া করি। কি হবে তা বুঝতে পারছিলাম না। বোমা থেকে বাঁচতে তখন ট্যাক্সিচালক আমাদের ঘুরিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে নিয়ে যান।’
কোনো মতে ইউক্রেন বর্ডারে গেলেও হয়রানির শেষ হয়নি তাদের। পোল্যান্ডে ভারতীয় দূতাবাসে পৌঁছতে ৪০ কিলোমিটারের বেশি হাঁটতে হয়েছে তাদের।
সমীর বলেন, ‘আমরা পোল্যান্ড বর্ডারে যাই। কিন্তু সেখান থেকে আমাদের বেরোতে দেওয়া হয়নি। তারপর আমরা শুনতে পাই পাশের অন্য বর্ডার থেকে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে। এরপর সেখান থেকে আমরা ৪০ কিলোমিটার হেঁটে যাই। আমাদের ৬ দিন ৬ রাত কেটে যায়। খাওয়া-দাওয়া এবং বিশ্রাম ছাড়াই এই কটা দিন আমাদের কাটাতে হয়েছিল। অবশেষে ভারতীয় দূতাবাসে পৌঁছে আমরা নিরাপদ অনুভব করি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।