সুদূর ইতালি থেকে ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন পড়তে। সেই একটি সিদ্ধান্তই জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল তার। পশ্চিমি সংস্কৃতিতে বড় হওয়া মেয়ে এসে পড়েন ভারতে। দেশের প্রথম সারির রাজনৈতিক পরিবারের বধূ হয়ে এ দেশে পা রেখেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। তারপর কখনো ইন্দিরা গান্ধীর বউমা, কখনো রাজীব গান্ধীর স্ত্রী, কখনো দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সভানেত্রী, কখনো আবার রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর মা-নানা ভূমিকায় তাকে দেখেছে ভারত। প্রশংসা, সমালোচনা, অপপ্রচার, দীর্ঘ যাত্রাপথে সবকিছুরই মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবুও দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন। কিন্তু ৭৬ বছর বয়সে পৌঁছে এবার কি রাজনীতি থেকে অবসরের কথা ভাবছেন সনিয়া গান্ধী! শনিবার নিজেই সেই জল্পনা উস্কে দিলেন তিনি। এনডিটিভি।

ছত্তীসগড়ের রাজধানী রাইপুরে কংগ্রেসের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন চলছে। দলের নেত্রী হিসেবে শনিবার, অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে সেখানে উপস্থিত ছিলেন সোনিয়া। প্রায় ১৫ হাজার কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন তিনি। আর সেখানেই রাজনীতি থেকে অবসরের জল্পনা উস্কে দেন। ওই সভায় সোনিয়া বলেন, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা দিয়েই ইনিংস শেষ হলো, এটাই আমার কাছে তৃপ্তির। এই যাত্রা আমাদের সন্ধিক্ষণে এনে ফেলেছে। এই যাত্রা প্রমাণ করে দিয়েছে, ভারতবাসী সর্বতোভাবে সম্প্রীতি, সহিষ্ণুতা এবং সমানাধিকারের পক্ষে। এই যাত্রা দল এবং তৃণমূল স্তরের কর্মীদের মধ্যেকার কথোপকথনের রেওয়াজকে ফিরিয়ে আনল। বোঝাতে পারলাম, কংগ্রেস আজও মানুষে পাশে রয়েছে, আজও তাদের জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত।’

একের পর এক রাজ্যে পরাজয়, অন্তর্কলহে যখন জেরবার দল, সেই সময় গত বছরের শেষ দিকে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় নেতৃত্ব দেন রাহুল গান্ধী। সেই যাত্রাপথেও ছেলের পাশে দেখা গিয়েছিল সনিয়াকে। রাস্তায় হাঁটু গেড়ে বসে সোনিয়ার জুতোর ফিতে বেঁধে দিয়েছিলেন রাহুল।

সেই মুহূর্ত ফ্রেমবন্দি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। তাই রাহুলের ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র হাত ধরে যাত্রা শেষ করার কথা বলে সোনিয়া আসলে রাজনীতিকে বিদায়ের ইঙ্গিতই দিলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে এ নিয়ে কংগ্রেসের তরফে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা কিছু হয়নি দুপুর পর্যন্ত।