উত্তর কোরিয়া অস্ত্র কর্মসূচিতে উন্নয়ন ঘটিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে স্থায়ী এই দেশ তিনটি এমন তথ্য জানাল। নিরপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে পশ্চিমা দেশগুলোর দূতরা উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা জানান।
উত্তর কোরিয়ার কর্মকাণ্ডকে তারা উসকানি হিসেবে অভিহিত করেন। তবে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর জন্য দেশটির ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কী না যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরা সে তথ্য জানায়নি। তবে সভা শেষে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী অন্য দুই দেশ চীন ও রাশিয়া কোনো কথা বলেনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কূটনীতিক জানান, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে যৌথ কোনো বিবৃতির প্রস্তাব আসেনি।
এর আগে গত ১ অক্টোবর জাতিসংঘের নিরপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে ফ্রান্স উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতির প্রস্তাব জানালে বেইজিং ও মস্কো ভেটো দেয়। গত মঙ্গলবার ফের সাবমেরিন থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা কেসিএনএ বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করে। দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী জানায়, ব্যালেস্টিক এই ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে সক্ষম এবং এটি সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার ওপরে উঠতে পারে। নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ‘উন্নত নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা প্রযুক্তি সমৃদ্ধ বলেও জানায় তারা। গত কয়েক সপ্তাহে কয়েক দফায় পরীক্ষামূলকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে উত্তর কোরিয়া। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
এসব পরীক্ষার মধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ অমান্য করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পারমাণবিক অস্ত্রের মতো ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি ও উৎক্ষেপণের ওপরও উত্তর কোরিয়ার প্রতি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে জাতিসংঘের। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা আমলে না নিয়ে সম্প্রতি কয়েক দফা ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে উত্তর কোরিয়া। সাবমেরিন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো- এতে ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করা কঠিন হয় এবং লক্ষ্যবস্তুর অনেক কাছে গিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যায়।
২০১৯ সালে প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে সাবমেরিন থেকে যে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছুড়েছিল উত্তর কোরিয়া, তার পুগুকসং ২। ২০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে পুগুকসং ২-এর। বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার সংগ্রহে বিভিন্ন পাল্লার সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র আছে। এসবের মধ্যে সবচেয়ে দূরপাল্লারটির নাম হোয়াসং ১৫। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ১৩ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
সূত্র: ফ্রান্স২৪
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।