বিশ্বে পাঁচ কোটিরও বেশি মানুষ ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রমে আক্রান্ত বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সাধারণত বয়স বাড়লে স্মৃতিশক্তি সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে।

সামগ্রিক বা আংশিক স্মৃতিশক্তি লোপ, কার্য-কারণ সম্পর্কযুক্ত ভাবনাচিন্তার অসুবিধা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অক্ষমতার মতো একাধিক সমস্যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় ডিমেনশিয়া বলা হয়। সবচেয়ে বহুল ও দুরারোগ্য ডিমেনশিয়ার উদাহরণ হল অ্যালঝাইমার্স।

ডিমেনশিয়ার কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নন বিজ্ঞানীরা। তবে ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি গবেষণায় ডিমেনশিয়ার ১২টি ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়েছে।

গবেষণাটি বলছে, এই ঝুঁকির দিকগুলো থেকে সতর্ক থাকলে প্রায় ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডিমেনশিয়া আটকানো বা স্থগিত করা যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, শ্রবণের সমস্যা, ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, মানসিক অবসাদ, কায়িক শ্রমের অভাব, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত মদ্যপান, মস্তিষ্কের আঘাত ও বায়ু দূষণ— এগুলো ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।

‘আমেরিকান একাডেমি অব নিউরোলজি’-তে প্রকাশিত সাম্প্রতিক একটি গবেষণা বলছে, নিয়মিত তেলমশলায় ভরা ‘ফাস্ট ফুড’ খেলে অনেকটাই বেড়ে যায় ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি। চীনের তিয়ানজিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণায় পরীক্ষা করে দেখা হয়েছিল ৭২,০৮৩ জন ব্রিটিশ নাগরিকের চিকিৎসা সংক্রান্ত তথ্য।

পরীক্ষার শুরুতে এদের সকলের বয়স ছিল ৫৫ বা তার বেশি। কিন্তু কেউই তখন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন না। এরপর ১০ বছর সময় ধরে তারা কেমন থাকেন, তার উপর নজর রেখেছিলেন গবেষকরা। গবেষণার শেষে ৫১৮ জন রোগী ডিমেনশিয়াতে আক্রান্ত হন।

গবেষণার ফল বলেছে, যারা এই সময়ে বেশি চিনি, লবণ ও স্নেহপদার্থে ভরা খাবারদাবার খেয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রেই বাড়ে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি। পাশাপাশি, কম প্রোটিন ও ফাইবারে ভরা খাবার খেলেও বাড়ে রোগের ঝুঁকি। ডিমেনশিয়ার আশঙ্কা বাড়ায় এমন খাবারের তালিকায় রয়েছে ঠান্ডা পানীয়, বেশি লবণ-চিনি দেওয়া রাস্তার খাবার, আইসক্রিম, ডুবোতেলে ভাজা মাংস, সস, প্রক্রিয়াজাত পাউরুটি ও প্যাকেটজাত খাবারও।