বাজারে পাওয়া যাচ্ছে মৌসুমি ফল রসালো আম। বাহারি জাতের আমের মৌ মৌ গন্ধ বাজার জুড়ে। আমের সঙ্গে একটু দুধ হলে যেন ভাত পায় পূর্ণতা। অনেকেরই আমের সঙ্গে দুধ-ভাত না হলে খাওয়াই জমে ওঠে না। আম ও দুধকে পুষ্টিকর খাবার হিসেবেই রাখেন খাদ্য তালিকায়।
এদিকে অনেকেই আবার মনে করেন, আম ও দুধ একসঙ্গে খাওয়া ক্ষতিকর। আমের সঙ্গে দুধ মেশালে হজমের সমস্যা হতে পারে বলে অনেকেরই মত। আমের সঙ্গে দুধ খাওয়া ক্ষতিকর, নাকি স্বাস্থ্যকর- এ বিষয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ জাহানারা আক্তার সুমির সঙ্গে।
পুষ্টিবিদ জাহানারা আক্তার সুমি জানান, আম যেমনি পুষ্টিকর একটি ফল, তেমনি শক্তির অনেক বড় একটা উৎস। আম অল্প ক্যালরিসমৃদ্ধ হলেও এতে অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যেমন শর্করা, আমিষ, আশ, ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান রয়েছে। ভিটামিনের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, বি ভিটামিন। খনিজ উপাদানের মধ্যে রয়েছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ফোলেট- যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে, চোখের সুস্বাস্থ্য রক্ষায়, রক্তসল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
এই পুষ্টিবিদ আরও বলেন, আম নানাভাবেই খাওয়া যায়। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত আর জনপ্রিয় হলো আম দিয়ে দুধ-ভাত। (আম+ভাত+ চিনি) এই তিনটি খাবারই শর্করা বা গ্লুকোজ জাতীয়। দুধ একটি আদর্শ খাবার, যাতে সব ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আম অল্প ক্যালরি সমৃদ্ধ হলেও দুধ, চিনি এবং ভাত কিন্তু উচ্চ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার। তাই যখন আম দিয়ে দুধ-ভাত খাওয়া হয়, তখন তার পুষ্টিগুণ যেমনি বেড়ে যায় ঠিক তেমনি ক্যালরির পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যায়।
আমের সঙ্গে দুধ খাওয়া ক্ষতিকর নয় উল্লেখ করে এই পুষ্টিবিদ জানান, আম-দুধ-ভাত ক্ষতিকর কোনো খাবার নয়। যাদের দুধ খেলে সমস্যা হতে পারে, তারা ছাড়া কারো এসব ক্ষেত্রে হজমের সমস্যা হয় না। কিন্তু যেহেতু এটি একটি মিক্সড খাবার এবং উচ্চ শর্করা ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত, তাই যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ওজনাধিক্য তাদের আম-দুধ- ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।
না হলে রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, সেই সঙ্গে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইডও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। শিশু, যুবক, তরুণ-তরুণীদের খাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমস্যা নেই। তারা আম-ভাত মূল খাবার হিসেবে খেতে পারবে আবার অন্য খাবারের সঙ্গেও গ্রহণ করতে পারবে।
কিন্তু বয়স্করা যদি খেতে চায় তাহলে চর্বি ছাড়া দুধ ও চিনিটা বাদ দিয়ে খাওয়া উচিত। তাহলে রক্তে গ্লুকোজ এর মাত্রা বাড়ার ঝুঁকি থাকবে না। সেই সঙ্গে আম বেশি খেলে অবশ্যই আমাদের প্রতিদিনের ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়াতে হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।