বয়সকে হাতের মুঠোয় বন্দী রাখতে সবাই চায়। প্রকৃতির নিয়মে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বাড়তে থাকে। তবে অনেকেই আছেন যাদের বয়সের তুলনায় বার্ধক্যের ছাপ খানিকটা বেশি দেখায়। এর অন্যতম কারণ অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস। যার ফলে বলিরেখা, চুল পরে যাওয়াসহ নানা রকম রোগের উপসর্গ দেখা দেয়।

ত্বক ও চেহারার সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসের যোগসূত্র রয়েছে। সাধারণত ত্বক টান টান করে রাখে কোলাজেন নামের প্রোটিন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের কোলাজেন উৎপাদন কমে যায়। যার ফলে ত্বক কুঁচকে যেতে থাকে, বলিরেখা পরতে শুরু করে। স্কিন স্পেশালিস্টদের মতে, খাদ্যতালিকায় কোলাজেনসমৃদ্ধ খাবার রাখলে বয়সের ছাপ দূর হয়ে যায় সহজেই।

শাকসবজি: গাঢ় সবুজ রঙের শাকসবজিতে আছে প্রচুর খনিজ উপাদান। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ, সি এবং ই। এগুলো কোলাজেন তৈরির জন্য দরকার। তাই খাদ্যতালিকায় শাক, বিশেষ করে পালংশাক, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শালগম ও শিমজাতীয় সবজি রাখুন।

গাজর: গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও থাকে, যা ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি মিষ্টি আলু, অ্যাপ্রিকটের (কমলা রঙের ফল), বাঙ্গি এবং আমও খাওয়া যেতে পারে।

টমেটো: টমেটোতে প্রচুর লাইকোপিন থাকে। এটি ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে। সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের কোলাজেন ভেঙে দেয়। এর ফলে বলিরেখা দেখা দেয় না। ত্বক থাকে টানটান ও মসৃণ।

সামুদ্রিক মাছ: সামুদ্রিক মাছেতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন ডি ত্বককে কোমল ও হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। তাই সম্ভব হলে সপ্তাহে অন্তত দুদিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেন স্কিন স্পেশালিস্টরা।

রসুন ও কাঁচা হলুদ: রসুন উচ্চ সালফার যুক্ত মসলা, এটি কোলাজেনের ভেঙে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। আর হলুদকে বলা হয় পাওয়ার হাউস বা শক্তিঘর। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পানির সঙ্গে কয়েক টুকরা কাঁচা রসুন ও হলুদ খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ত্বকও হয় মসৃণ।

লেবু: ত্বকের বলিরেখা ও ক্ষত দূর করতে লেবুর কোনো জুড়ি নেই। প্রতিদিন সকালে চিনি ছাড়া এক গ্লাস লেবুর রস খেলে কিন্তু ত্বক সজীব থাকে।

কাঠবাদাম: কাঠবাদামে প্রচুর ভিটামিন ই, সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। তাই তো বিশেষজ্ঞরা ৩০ বছর বয়সের পর নিয়মিত পাঁচ-ছয়টি করে কাঠবাদাম খাদ্যতালিকায় রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

৩০ বছর বয়সের পর নিয়মিত পাঁচ-ছয়টি করে কাঠবাদাম খাবেন, এতে ত্বকে বলিরেখা দেরিতে দেখা দিবে
কিউই ও বেরি: কিউই ও বেরিজাতীয় ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। ভিটামিন সি অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রোলিন ও গ্লাইসিনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে হাইড্রোক্সিপ্রোলিন তৈরি করে। এটি কোলাজেনের ভেঙে যাওয়া রোধ করে।

বিটরুট: বিটরুটের ভিটামিন এ, সি, পটাসিয়াম ও সুপার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের মৃত কোষকে দূর করে ত্বক পরিষ্কার রাখে, ত্বকের ছিদ্রগুলো মেরামত করে। প্রতিদিন ৫০০ মিলি বিটরুটের জুস পান করলে বা সালাদ হিসেবে বিটরুট খেলে ত্বক ভালো থাকে।