সব বাঙালিই কমবেশি খাবারে ঝাল পছন্দ করেন। বাঙালির রান্নায় যেসব মসলা ব্যবহৃত হয়, তার প্রত্যেকটিরই কোনো না কোনো গুণ আছে৷ যেমন- হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, ভিটামিন সি’র জোগান দেয় ইত্যাদি।

ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালের প্রকাশিত বেইজিংয়ের ‘পিকিং ইউনিভার্সিটি হেলথ সায়েন্স সেন্টার’, যুক্তরাষ্ট্রের ‘হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেল্থ’ যুক্তরাজ্যের ‘ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ডের গবেষকদের করা গবেষণায় দেখা যায়, ‘যারা সপ্তাহের প্রতিদিন ঝাল খাবার খান তাদের মৃত্যুঝুঁকি ১৪ শতাংশ কমে যায়। তবে ঝাল সবার জন্য নয়। আর উপকারী কিছু অতিরিক্ত গ্রহণ করলে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল।’

খাবারে হালকা ঝাল মসলা স্বাদ ও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কিন্তু খেতে গিয়ে আচমকা একটা মরিচ চিবিয়ে ফেললে ঝালে যখন হাতের তালু পর্যন্ত জ্বলে যায়, তখন কী খাওয়া উচিত তা অনেকেই জানেন না। আসুন জেনে নেই ঝাল থেকে চটজলদি মুক্তি পেতে কোন খাবারগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখে সে সম্পর্কে-

দুধজাতীয় খাবার

ঝাল লাগলে দুগ্ধজাত খাবার জাদুর মতো কাজ করে। ঠান্ডা এক চুমুক দুধ বা এক চামচ দই মুখের জ্বালা জুড়াতে পারে। দই মুখে দিলে দ্রুত মুখের জ্বলাভাব কমে যাবে। দুগ্ধজাত খাবারে ক্যাসেইন নামক এক ধরনের উপাদান থাকে, যা ঝালে থাকা ক্যাপসিসিনকে ভেঙে ফেলে ও এর প্রভাব থেকে মুক্তি দেয়।

চিনি বা মধু

মুখে বেশি ঝাল লাগলে একটু চিনি বা এক চামচ মধু খেয়ে নিতে পারেন। তেলজাতীয় ক্যাপসিসিনকে চিনি বা মধু শোষণ করে নেয় এবং মুখের জ্বলা ভাব দ্রুত দূর করে।

শ্বেতসার

খাবার খেয়ে বেশি ঝাল লাগলে দ্রুত ফোলা রুটি বা একগাল ভাত খেয়ে নিতে পারেন। ক্যাপসিসিন ও মুখের মধ্যে প্রাকৃতিক বাধা তৈরি করে শ্বেতসার। এতে কিছুটা ক্যাপসিসিন শোষিত হয়। ঝাল মসলা ছাড়া সেদ্ধ আলুও কাজে দিতে পারে।

টমেটো ও লেবু

টমেটো ও লেবু মুখের ঝালভাব দূর করতে দারুণ কাজে দেয়। ঝালের যে অ্যাসিড থাকে, তা টমেটো বা লেবু খেলে কার্যকারিতা হারায়। ঝাল লাগলে তাই দ্রুত দু-এক টুকরো টমেটো মুখে দিতে পারেন। কমলা, আনারস ও লেবুর রসেও একই ধরনের উপাদান আছে।

পানি কাজে আসে না

তবে ঝাল লাগলে অনেকেই পানি পান করেন। ক্যাপসিসিন প্রাকৃতিক তেল ও পানির সঙ্গে মেশে না। তাই মুখের ঝিল্লিতে ক্যাপসিসিনের প্রভাব কমাতে পারে না পানি। বরং পানি খেলে তেল ছড়িয়ে যায় এবং বেশি ঝালবোধ হয়। এর বদলে টমেটো, মধু বা পাউরুটি খেয়ে দেখতে পারেন।