স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা কঠিন সময় পার করছি। জ্বালানি মূল্য কয়েকগুণ বেড়েছে। এটা সারা পৃথিবীর বাস্তবতা। শিল্পখাতে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে গ্যাস আমদানি করতে হয়। পৃথিবীর বাস্তবতায় বাংলাদেশ এখনো ভালো অবস্থানে আছে। যদিও অনেক সময় অনেক কারখানায় গ্যাস সরবরাহ দেওয়া যাচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটা সময় ইন্ডাস্ট্রির পর ইন্ডাস্ট্রি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়ার দৃশ্য আমরা দেখেছি। মালিকদের কেউ কেউ যখন শ্রমিকদের বেতন দিতে পারতেন না তখন বিক্ষোভ-ভাঙচুর ও জ্বালাও-পোড়াও হতো। সে অবস্থা এখন বদলেছে। ব্যবসায়ী নেতাদের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী শিল্প পুলিশ গঠন করেছেন।

১৫ বছর আগের পুলিশ ও বর্তমান পুলিশ আলাদা, বর্তমান পুলিশ অনেক দক্ষ ও বিচক্ষণ বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, একসময় আমাদের গার্মেন্টসের মা-বোনেরা রাতে গার্মেন্টস থেকে বের হলে তার বেতনের টাকা ছিনতাই হতো। এখন শিল্প পুলিশ সেখানে সেতুবন্ধনের মতো কাজ করছে। শিল্প পুলিশ শ্রমিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।

শিল্প পুলিশের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা শ্রমিক-মালিক সবার সমস্যা শুনুন। বেসরকারি শিল্পখাতে এখন অগ্রগতি হয়েছে। শিল্প পুলিশ কাজ করছে বলেই আজ শিল্প খাতে স্থিতিশীলতা বজায় আছে।

শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মালিক-শ্রমিক সবাই বাস্তবতার সব কিছুই জানেন। তবে বাংলাদেশ এখনো সেই অবস্থায় যায়নি, যা আতঙ্কিত করার মতো। পৃথিবীর ১০ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন হয় ইউক্রেনে, সেখানে যুদ্ধ চলছে। বাস্তব অবস্থাটা পরিষ্কার করে আপনারা সবাইকে জানান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি ইন্ডাস্ট্রি। ২০০৯ সালে যদি আমাকে বলা হতো, আগামী ১০-১২ বছর পর দেশের অর্থনীতি এই অবস্থায় যাবে। আমি বলতাম সম্ভব নয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী দেখিয়ে দিয়েছেন এটি সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলতেন, আমাদের সবকিছু আছে, দরকার শুধু একটা অনুকূল পরিবেশ। এ পরিবেশ তৈরির পেছনে অনেকগুলো উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, শিল্পে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করেছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ফলে অর্থনীতি একটা ভালো অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে মূল রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮১ ভাগই আসে পোশাকশিল্প থেকে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মাহাবুবর রহমান বলেন, আমরা ফিরে তাকাতে চাই ১২ বছর আগে। সে সময় শিল্পাঞ্চলে এক অরাজক পরিস্থিতি ছিল। জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনসহ নানা পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের উদ্ভব।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে অগ্রিম তথ্য পাচ্ছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান, সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ও বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান প্রমুখ।