বাংলা ভাষা অত্যন্ত সমৃদ্ধশালী ভাষা। এই ভাষাকে আরও বেশি ব্যবহার করে সকলে আরও সম্মান করতে এবং বাংলা ভাষার মর্যাদা কমিয়ে ইংরেজি ব্যবহার না করতে বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, সেই বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের ইংরেজি ভাষা ব্যবহারের সময় বাংলা ভাষা যেন প্রাধান্য পায় সেই চেষ্টা করে যাবেন।

তিনি বলেন, আমি এমন কথা বলি না যে ইংরেজি ব্যবহার করব না, কারণ সারা বিশ্বে চলতে হলে আমাদেরকে ইংরেজি ব্যবহার করতে হবে, কিন্তু আমরা আমাদের ভাষার মর্যাদা কমিয়ে ইংরেজিকে ব্যবহার করবো না। শহীদ দিবসে এটাই হোক আমাদের প্রত্যয়।

২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে সোমবার সকালে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৪৮ সালে সোনার বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলা আমাদের রাষ্ট্র ভাষা হবে এই দাবি জানিয়েছিলেন। ১৯৫২ সালে তিনি যখন কারাগারে ছিলেন, তখন বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনে শরীক হয়ে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, জব্বারসহ আরও অনেকে নিহত হন।

তিনি আরও বলেন, বাঙালী জাতির দাবির আন্দোলনের ইতিহাস, দাবি আদায়ের ইতিহাস রক্তের সাথে মিশে গেছে, ভাষার জন্য কোন জাতি রক্ত দিয়েছে এরকম নাই। যারা স্বাধীনতার জীবন দিয়েছেন ভাষা শহীদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ৩০ লক্ষ্য মা বোন যারা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞা জানাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞা ও শ্রদ্ধা জানাই।

মন্ত্রী বলেন, আমরা ৫২ থেকে অনেক দূর এগিয়ে এসেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে সারা বিশ্বে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে সম্মান করার এবং স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এখন একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা হিসেবে সারা বিশে স্বীকৃতি পেয়েছে।

আনিসুল হক বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সারা বিশ্বে উন্নয়নের রুল মডেল হিসেবে পরিচিত করেছেন তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তার সকল উন্নয়ন প্রকল্পে তাকে সহযোগিতা করে আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি ছিলেন- আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের টনকি গ্রামের ভাষা সৈনিক মিয়া মোঃ মতিন।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ জয়নাল আবেদীন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ জামসেদ শাহ্, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ সেলিম ভূইয়া, উপজলো নির্বাহী কর্মকর্তার স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা মোঃ শাহনুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শওকত আকবর, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মমিন বাবুল, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন বেগ শাপলু, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন স্বাধীন প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন- যুবলীগ নেতা মো: মনির হোসেন।এদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আখাউড়ার ১১ জন সাংবাদিককে শুভেচ্ছা স্মারক সম্মানা প্রদানের অংশ হিসেবে ৫ জনের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক দেওয়া হয় অনুষ্ঠানে। সম্মাননা প্রাপ্ত সাংবাদিকেরা হলো আখাউড়া প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক হান্নান খাদেম, আখাউড়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জালাল হোসেন মামুন, রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আব্দুল মমিন বাবুল, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মহিউদ্দিন মিশু।

অনুষ্ঠানে উপজেলার সকল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বিতরণের জন্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের দেওয়া উপহার ৩৫ হাজার মাস্ক বিদ্যালয় প্রধানদের হাতে হস্তান্তর করা হয়।

এর আগে শহীদ দিবস উপলক্ষে রোবার রাত ১২ টা ১ মিনিটে উপজেলার শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে উপজেলা প্রশাসন, আওয়ামী লীগ, আখাউড়া পৌরসভা, থানা পুলিশসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সাধারণ মানুষ।