মামুনুর রশীদ মামুন, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানার কেদার ইউনিয়নের টেপারকুটি মন্ডল পাড়ায় এক অবৈধ বালু তোলার ড্রেজার মেশিনে আগুন দেয়ার অভিযোগে কচাকাটা থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই শাহজালাল উদ্দিনকে ঘন্টাব্যাপি অবরুদ্ধ করে রাখে গ্রামবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে। পরে খবর পেয়ে কচাকাটা থানার আরোও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
তবে তার আগেই স্থানীয় এক যুবক তাকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্ত করে থানায় পাঠান। ড্রেজার মালিকদের অভিযোগ প্রতি মাসে ড্রেজার প্রতি ৫হাজার টাকা দিতে হয় ওই এসআইকে। টাকা দিতে দেরী হলে ড্রেজার ভাংচুর করেন তিনি। তবে টাকা নেয়ার কথা ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন এসআই শাহজালাল। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, মন্ডলটারী গ্রামের সুলতান আহম্মেদ বারুর বাড়ির পিছনে একটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে দুধকুমার নদীর পাশে ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালু উত্তোলন করেন ড্রেজার মালিক সহিদুল ইসলাম।
সে বালু দিয়ে দামাল গ্রামের আব্দুস ছালাম মিয়ার বাড়ির পাশের খাল পুরন করা হচ্ছিল। শহিদুল ইসলামের দাবী প্রায় এক মাস থেকে বালু তুলছিলেন তিনি। গেলো মাসের ২৮ তারিখে এসআই জালাল উদ্দিনকে ৫হাজার টাকা দিয়েছেন তিনি।
এ মাসেও টাকা চেয়েছেন তিনি। আজ (মঙ্গলবার) বিকালে তার সাথে দেখা করে আরও টাকা দেয়ার কথা হয় কিন্তু তিনি দুপুরে এসে মেশিনে আগুন ধরিয়ে দেন। বাড়ির পাশে মেশিনে আগুন দেয়া এবং বাড়িতে আগুন লাগার আশঙ্কায় গ্রামবাসী এসে আগুন নিভায় এবং এসআইকে মন্ডলপাড়া জামে মসজিদের সামনে ঘন্টাব্যাপি অবরুদ্ধ করে রাখে।
অন্য ড্রেজার মালিক শাহালম জানান, প্রতি মাসে তাকে (শাহজালাল) ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা দিতে হয়। গতমাসে তিনি সাড়ে ৫ হাজার টাকা দিয়েছেন ওই এসআইকে। স্থানীয় আনছার আলী জানান, বন্যায় বাড়িতে পানি উঠে তখন গবাদিপশু নিয়ে তাদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সে কারণে ড্রেজারমেশিন দিয়ে মাটি কেটে বাড়ির ভিটা উচু করে চরাঞ্চলের মানুষ। তবে এটা বৈধ কিনা অবৈধ সেটা জানেন না তারা। কেদার ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নূর ইসলাম জানান, শুনলাম মাসিক যে টাকাটা দেয়ার কথা সেটা না দেয়ায় পুলিশ এসে ড্রেজারে আগুন দিয়েছে।
পরে পাবলিক ওই পুলিশকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এসআই শাহজালাল উদ্দিন জানান, দুই গ্রামবাসীর অভিযোগে অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করতে যাই। সেখানে আগুন দেয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে গ্রামবাসী আমাকে আট দশ মিনিট একরকম অবরুদ্ধ করে রাখে। তবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। পরে ড্রেজারের পাশের বাড়ির মালিক বারু নামের এক যুবক আমাকে সেখান থেকে নিয়ে আসে। প্রতি মাসে ড্রেজার প্রতি টাকা নেয়ার কথা ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন তিনি। সুলতান আহম্মেদ বারু জানান, আমি বাড়িতে ছিলাম না খবর পেয়ে এসে দেখি গন্ডগোল চলছে।
পরে ওই এসআই বলে পাবলিক আমাকে যেতে দিচ্ছে না। পরে আমি তাকে সাথে নিয়ে এগিয়ে দিয়ে আসি। মেশিনে আগুন দেয়ার ঘটনায় মানুষের আশঙ্কা ছিলো বাড়িতে আগুন লাগবে। সেই কারনে এরকম ঘটনা ঘটেছে। কচাকাটা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাবুব আলম জানান, এলাকায় জাতীয় সংসদ সদস্য মহোদয়ের আগমনে আমি তার ডিউটি তদারকিতে ছিলাম। এই মাত্র থানায় আসলাম। বিষয়টি আমি বিস্তারিত শুনে জেনে সেখানে কি ঘটেছিলো পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো।