টাঙ্গাইলের মধুপুরে নিজ বাড়িতে একই পরিবারের ৪ জনের লাশ উদ্ধারের রহস্য উদঘাটন করেছে র্যাব। সেই সাথে গ্রেফতার করা হয়েছে নেপথ্যে থাকা মূলহোতাকে।
আজ রোববার মধুপুরের ব্রাহ্মণবাড়ি গ্রাম থেকে খুনের মূলহোতা সাগরকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাগর এসব তথ্য জানিয়েছেন বলে জানায় র্যাব।
রোববার (১৯ জুলাই) উপজেলার মির্জাবাড়ি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে এইসব তথ্য জানান র্যাব-১২–এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম।
তিনি জানান, টাকা ধার চাইতে এসে অপমানিত হওয়য়ার পর তীব্র আক্রোশে আব্দুল গণী ও তার পরিবারের ৩ সদস্যকে গলা কেটে হত্যা করেন তারই প্রতবেশী রিকশাচালক সাগর আলী। এর আগেও বেশ কয়েকবার আব্দুল গণির কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়েছিলেন সাগর আলী। সেগুলো দিতে ব্যর্থ হয়ে আবারও টাকা চাওয়ায় তাকে অপমান করে আব্দুল গণি।
তিনি আরও বলেন, আব্দুল গণির সাথে সাগর আলীর সম্পর্ক ছিল দীর্ঘদিনের। গত বুধবার (১৫ জুলাই) সকালে আব্দুল গণির কাছে ২০০ টাকা ধারের জন্য যান সাগর আলী। আগে নেওয়া টাকা পরিশোধ না করে আবারও ধার চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাগরকে ধম দিয়ে ফিরিয়ে দেন। এতে সাগর অপমানিত হয়ে প্রতিশোধ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।
ওইদিনই মধুপুর বাজারে গিয়ে আব্দুল গণিকে হত্যার পরিকল্পনা করে সাগর আলী। পরিকল্পনা মাফিক রাত ১০টার দিকে মাস্টারপাড়া এলাকায় আব্দুল গণির বাসায় প্রবেশ করে সাগর। স্ত্রী ও সন্তানেরা ঘুমিয়ে থাকায় সাগর আলীর সাথে খোশগল্পে নেতে যায় আব্দুল গণি। এক পর্যায়ে রুমালে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে তা আব্দুক গণির নামে মুখে চেপে ধরে অজ্ঞান করে ফেলে সাগর আলী। একইভাবে অন্য কক্ষে থাকা আব্দুল গণির স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকেও অচেতন করেন।
পরে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ছুরি দিয়ে এবং ওই বাড়িতে থাকা কুড়াল দিয়ে তাঁদের হত্যা করেন। তাঁরা ওই বাড়ি থেকে কিছু মালামাল লুট করে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় ঘরের দরজা ও গেটে তালা দিয়ে যান। পরে সে ব্রাহ্মণবাড়ি আশ্রয়ণ প্রকল্পে তাঁর বোনের ঘরে লুট করা মালামাল গর্ত করে লুকিয়ে রাখেন।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সাগরকে তারা চিহ্নিত করে। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনার সঙ্গে আরও একজনের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
এদিকে মধুপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কামরান হোসেন জানান, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে আজ দুপুরে জোয়াদ আলী (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে ব্রাহ্মণবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার মধুপুর উপজেলা সদরের মাস্টারপাড়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে গনি, তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে–মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। ওই দিন রাতেই আবদুল গনির বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মধুপুর থানায় মামলা করেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।