রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার বহরমপুরে আনুমানিক ১ একর একটি পুকুর রাতের আঁধারে পুকুর সংস্কারের নামে চলছে মাটি বিক্রির মহোৎসব।প্রশাসন বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে আছেন।
আদালতের আদেশ কে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে একের পর এক ফসলি জমিকে শ্রেণি পরিবর্তন করে পুকুর খনন এবং পুরাতন পুকুর সংস্কারের নামে মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।তবে উক্ত জমির শ্রেণি পরিবর্তন না করলেও স্থানীয় সাংবাদিক পরিচয়ে কোরবান আলী নামের একজন জানায় আমার পৈতৃক বাপ দাদার ভিটা আমি প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে পুকুর খনন করছি।
৩০মে (বৃহস্পতিবার) আনুমানিক রাত ১২:২৫ মিনিটে দুর্গাপুর উপজেলার বহরমপুর এলাকায় সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, এখানে পুকুর সংস্কারের নামে চলছে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি।উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), এসি ল্যান্ড ও থানা ম্যানেজ করেই একজন সাংবাদিক পরিচয় দানকারী কুরবান আলী নামের এক ব্যক্তি পুকুর খনন করছে রাতের আঁধারে।
ইউএনও লিখিত অনুমোদন না দিলেও মৌখিকভাবে অনুমোদন দেয় এভাবে যে, পুকুর খননের কাজ যেন দিনে না করে যেনো রাতের আঁধারে পুকুর খননের কাজগুলো করা হয়।শুকনো মাটির ধোলাই নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ আর মাটি পরিবহনের জন্য এই রাস্তাগুলো নষ্ট হতে চলেছে।আর রাস্তায় মাটি পরে থাকা অবস্থায় বৃষ্টি হলে চলাচল যেন মরণ ফাঁদ।থানায় বা ভূমি অফিসে অভিযোগ দিলে কোন কাজ হয় না কারণ তারা আগেই ম্যানেজ হয়ে আছে।ফোন দিলেই বলে দেখব, দেখছি, ব্যবস্থা নিচ্ছি।
সরজমিনে গিয়ে আরও জানা যায়, এই সাংবাদিক কুরবান আইনকে তোয়াক্কা না করে পুকুর খননকে পুঁজি করে ব্যবসা খুলে বসেছে। তাদের নিজের জমি বা পুকুরের সাথে কোন সংযুক্ত নাই কিন্তু তারা টাকার বিনিময়ে দায়িত্ব নিয়ে প্রভাব খাটিয়ে রাতের আঁধারে পুকুর খনন আর মাটি বিক্রি করে আসছে।
এলাকার ভুক্তভোগীরা আরোও জানান, বড় বড় ড্রাম ট্রাকে একের পর এক গাড়ি ভর্তি করে মাটি বিক্রি করেছে বিভিন্ন ইটভাটায়।দুই দিন আগে রাতে বৃষ্টি হওয়ায় পুরা রাস্তা কাদায় নষ্ট হয়েছিল সকালে আমরা চলাচল করতে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি।
বহরমপুর গ্রামের মাবুদ সরকার জানান, দুর্গাপুর এলাকায় পানের চাষ খুব ভালো হয় সেই পানের বরের জন্য পুকুরের মাঝখানের মাটিটি খুব কাজে দেয়।এই মাটি খাদক গুলি সেই পুকুরের মাটি পানের বরে না দিয়ে বিক্রি করছে ইট ভাটাই। পানের বরে সেই মাটি দিলে কৃষকের কাছে দাম কম পাবে সে জন্য বেশি টাকার আশায় বিক্রি করছে ইট ভাটায়।বেশি টাকা নেওয়ার একটাই কারণ প্রশাসনকে ম্যানেজ করার জন্য তাদের যে খরচটি হয় সেটা দেওয়ার পরেও যেন তাদের পকেট ভর্তি হয়।যারা পুকুর খনন করছে তাদেরকে এই সব কিছু করার ক্ষমতা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।যাদের পকেট গরম করে এরা গাড়ির পর গাড়ি মাটি ভর্তি করে ইটভাটার দিকে চলে যাচ্ছে পুলিশের সামনে দিয়ে।
পুকুর খননকারি কুরবান জানান, আমি আমার নিজের পুকুর সংস্কার করছি ইউএনও আমাকে লিখিত অনুমতি দিয়েছে আমার কাছে সব অনুমতি কপি আছে।
মাটি কেটে ড্রাম ট্রাকে করে বের করার অনুমতি আছে কিনা জানতে চাওয়ায় তিনি বলেন, মাটি বের করার অনুমতিও আছে।সেই অনুমতির কপি দেখতে চাওয়ায় তিনি বলেন কাগজের কপি বাসায় আছে।
এছাড়াও কুরবান প্রতিবেদককে আরও জানান, আমার পুকুরের কাজ কেউ বন্ধ করতে পারবেনা।আপনি ইউএনও থানা যাকে ইচ্ছা বলেন কাজ আমার চলবেই আমি ম্যানেজ করেই কাজ করছি আমার সাথে ইউএনও স্যারের সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে।আপনি যাকেই ফোন দেবেন তার ফোন আমার কাছে আসবে আমি গাড়ি তুলে নেওয়ার পর প্রশাসনের কোন ব্যক্তি পুকুর পাড়ে আসবে।
দুর্গাপুর থানার ওসি জানান, বহরমপুরে পুকুর খননের বিষয়ে আমার কিছু জানা নাই, এসব পুকুর খননের বিষয়ে আমার কিছু বলার নাই এগুলো ইউএনও এবং এসিল্যান্ড দেখবে।
অথচ গতকাল রাতেই ঘটনাস্থল থেকে এক গনমাধ্যমকর্মী তাকে ফোন দেওয়ায় তিনি ফোন রিসিভ করেননি পরে তাকে হোয়াটস অ্যাপে পুকুর খনন এবং মাটি বহনের ভিডিও দেওয়া হয়।
দুর্গাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুমন চৌধুরীকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) স্বীকৃতি প্রামানিক মুঠোফোনে জানায়, পুকুর সংস্কারের অনুমতি আছে কিনা দেখে জানাচ্ছি।মাটি বের করার অনুমতি এটা তো অসম্ভব কারণ রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে এবং ধুলাবালিতে পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে।পরে তিনি আর অনুমতি আছে কি না জানাননি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।