বগুড়ার আদমদীঘিতে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহবুবা হক স্যান্ডেল পায়েই শহীদ মিনারে ওঠেন।

 

তবে পবিত্র শহীদ মিনারে স্যান্ডেল পায়ে ওঠার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেননি এসিল্যান্ড। বরং বিষয়টি পত্রিকায় না লিখতে পরামর্শ দেন

বগুড়ার আদমদীঘিতে আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহবুবা হক স্যান্ডেল পায়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ওঠায় জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

এসিল্যান্ডের দাবি,  তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় স্যান্ডেল পায়েই শহীদ মিনারের বেদিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। তবে এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ বা আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলার মতো আদমদীঘি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের আলোচনা সভা এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। এছাড়া অন্যদের মধ্যে আদমদীঘির এসিল্যান্ড মাহবুবা হক, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু রেজা খান ও নাজিমুল হুদা খন্দকার, যুগ্ম সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম চম্পা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মিনারের বেদিতে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে সব অতিথি খালি ও মোজা পায়ে উঠলেও এসিল্যান্ড মাহবুবা হক স্যান্ডেল পায়ে ওঠেন। এছাড়া ছবি তোলার সময় দাঁড়ানো নিয়ে অন্যদের সাথে বাকবিতণ্ডাও করেন। বিষয়টি উপস্থিত সকলের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, “উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত কেউ যদি স্যান্ডেল পায়ে পবিত্র শহীদ মিনারে উঠে অবমাননা করেন তাহলে তা খুবই দুঃখজনক।”

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম চম্পা বলেন, “এসিল্যান্ডের স্যান্ডেল পায়ে শহীদ মিনারে ওঠার বিষয়টি সকলে অবগত আছেন। এতে অনেকের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলেননি।”

উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল ইসলাম খান রাজু বলেন, “শহীদ মিনারে জুতা-স্যান্ডেল পায়ে ওঠা উচিত নয়। এসিল্যান্ড এ কাজ করে থাকলে ভুল করেছেন।”

এ প্রসঙ্গে এসিল্যান্ড মাহবুবা হক বলেন, “আমি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা তাই স্যান্ডেল পায়েই মঞ্চে উঠেছিলাম।”

এ সময় তিনি উপজেলায় তার অনেক কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিলেও পবিত্র শহীদ মিনারে স্যান্ডেল পায়ে ওঠার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেননি। বরং এ ব্যাপারে পত্রিকায় না লিখতে পরামর্শ দেন।

এদিকে, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সীমা শারমিনকে জানালে তিনি বলেন, “এসিল্যান্ড অসুস্থ, তাই হয়তো ভুলে স্যান্ডেল পায়ে মঞ্চে উঠেছেন।”

এর আগে ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারে শহীদদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আশিক খান এবং থানার ওসি আজিম উদ্দিন জুতা পায়ে শহীদ বেদিতে উঠেছিলেন। এ ঘটনায় জনগণের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হলেও তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

 

#ঢাকা ট্রিবিউন