ভূমিদস্যু ও লাঠিয়াল বাহিনীর হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে শাহনাজ পারভীন রিতা (৩১)। জানা যায়’ বরগুনা জেলার পাকুর গাছিয়া গ্রামের মৃত মাজেদ ভান্ডারীর বড় মেয়ে শাহনাজ পারভীন রিতা নিত্যদিনকার মত গত ৮ আগষ্ট ভোরে ঘুম থেকে উঠে উঠোনে হাতমুখ ধুইতে ছিল।

আগে থৈ ওত পেতে থাকা এলাকার ভূমি দস্যু লাঠিয়াল বাহিনী আজেদ ও তার দল বল নিয়ে রিতার(৩১)ও তার মায়ের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তার দুটি পা ভেঙে ফেলে।যখম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে। উপর্যপরি হামলায় এক পর্যায়ে রিতা সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে। হামলাকারীরা মৃত ভেবে তাকে পাশের ডোবায় ফেলে যায়। যাওয়ার সময় ঘরে থাকা তার আইফোন সহ দুটি ফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে বরগুনা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করায়।

গুরুতর আহত হওয়ায় বরগুনা হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে বরিশাল মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। সেখানে কয়েকদিন চিকিৎসা নেয়ার পর তার মা কিছু টা সুস্হ হলেও রিতা অবস্থা অবনতি হতে থাকে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতাল রেফার করা হয়। বর্তমানে শাহনাজ পঙ্গু হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। বিস্তারিত খবর নিয়ে জানা গেছে, হামলাকারী ওয়াজেদ আলী চৌকিদারের ছেলে ইব্রাহিম ও ছগির চৌকিদার, মইজুদ্দিন চৌকিদারের ছেলে ওয়াজেদ আলী চৌকিদার, আবুল চৌকিদার, ফারুক চৌকিদার’, মইজুদ্দিন চৌকিদারের স্ত্রী মিনারা বেগম,মেয়ে ছকেরা, বোন রোকেয়া বেগম, খালেক হাওলাদারের ছেলে বিল্লাল, আফজাল হোসেনের ছেলে হাসান, আব্দুল লতিফ খান এর ছেলে চান মিয়া এরা সাহানাজ পারভিন রিতার সৎ চাচা, ফুফু ও চাচাত-ফুফাতো ভাই বোন। এরা এলাকার ভূমিদস্যু ও লাঠিয়াল বাহিনী ।

এলাকায় অন্যোর জমিজমা জোরপূর্বক দখল, চুরি ডাকাতি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা এদের কাজ। এরা এক সময়ের ত্রাস মৈজুদ্দি ডাকাতের সন্তান ও বংশধর। ভিকটিম শাহনাজ পারভীন রিতার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে উক্ত হামলা কারী আসামিরা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি জোর জবরদস্তি করে ভোগ দখল করে আসতে ছিল। ঢাকায় বসবাস কারী রিতার মা গত দু’বছর আগে শাহনাজ পারভীন রিতা কে নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে আসে স্হায়ী ভাবে বসবাস করার জন্য। বাবার ক্রয়কৃত পৈত্রিক সম্পত্তির উপর একটি টিনের ঘর তুলে বসবাস করতে থাকে। ভাগ বাটোয়ারা করে সৎ চাচা ওয়াজেদের সাথে। হামলাকারি ওয়াজেদ দীর্ঘদিন যাবৎ যে জায়গা-জমি দখল করে রেখেছিল তা মাপার পর রিতাদের মধ্যে চলে আসে।

এতে ক্ষিপ্ত হয় অজেদ চৌকিদার সহ উক্ত আসামীগন। অস্বীকার করে পাওনা ভিটে-জমি বুঝিয়ে দিতে। আইন-আদালত গ্রাম্য সালিশি কোনটাতেই না পেরে উক্ত আসামি ওয়াজেদ গত এক বছর আগে শাহনাজ পারভীন রিতার মাকে মারধর করে। ভয় দেখায় এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য।এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এরপর থেকে উক্ত আসামিরা প্রতিনিয়ত রিতা ও তার মাকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিতে থাকে। গ্রামবাসী তাদেরকে অভয় দিলে তারা তাদের পৈত্রিক ভিটায় বসবাস করে আসতে ছিল। কোন কিছুতেই পেরে উঠতে না পারায় উক্ত ভূমিদস্যুরা গত ৮ আগস্ট শাহনাজ পারভীন রিতা ও তার মাকে হত্যার জন্য ধারালো অস্ত্র রামদা, লোহার রড সহ লাঠিসোটা দিয়ে বেদম মারধর করে।

এ ব্যাপারে বরগুনা সদর থানায় শাহনাজের ভাই আল আমিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ (২৬ আগষ্ট এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত) কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ আসামীরা এলাকা দিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে বলে এলাকাবসীর জানিয়েছে। এদিকে রিতার চিকিৎসা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা পংগু হাসপাতালে ব্যস্ত থাকার সুযোগে তার বাড়ির সমস্ত মালামাল প্রধান আসামী অজেদ চৌকিদার তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে লুট করিয়েছে। পুলিশ মালামাল উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছেন।