মামুনুর রশীদ মামুন, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের রাজারহাটে নিজ ছেলে আব্দুল জলিল (২৬) এর হাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পয়ার উদ্দিন (৫৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। ছেলের আঘাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন মা জুলেখা খাতুনও (৪৫)। রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখা সলিমবাজার এলাকায় সংঘটিত এ ঘটনায় আহত পয়ার উদ্দিন সোমবার (৪এপ্রিল) দুপুরে রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনার পর থেকে ছেলে আব্দুল জলিল পলাতক ছিলো। পরে সোমবার রাতে আব্দুল জলিলকে রাজারহাট থানা পুলিশ একই গ্রামের নজরুলের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে । এসময় জলিলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি ধান ক্ষেত থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ। রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজু সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন উর রশীদ জানান, অভিযুক্ত আব্দুল জলিল একাধিক বিয়ে করেছে। তার প্রথমদিকের দুই স্ত্রী তাকে ডিভোর্স করে চলে গেছে। গত ৩ মাস পূর্বে তৃতীয় স্ত্রীও নির্যাতন ও যৌতুক মামলা দিয়ে তাকে ডিভোর্স করে। সেই মামলায় আসামি হয়ে জামিন নিয়েছেন পয়ার উদ্দিন ও তার স্ত্রী জুলেখা খাতুন। ছেলে আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
এনিয়ে তৃতীয় স্ত্রীর সাথে রফা দফার চেষ্টা করছিল আব্দুল জলিল। এজন্য পিতা পয়ার উদ্দিনকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল সে। এনিয়ে রবিবার (৩এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে বাবা-ছেলের বাক বিতন্ডার এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে পয়ার উদ্দিনকে আঘাত করে জলিল। উপর্যুপরি আঘাতে পয়ার উদ্দিন রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই লুটিয়ে পরেন। এ ঘটনায় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী জুলেখা খাতুনও আঘাতপ্রাপ্ত হন। ঘটনার পরই পালিয়ে যায় জলিল। পরে রাত ৯টার দিকে গুরুতর আহত পয়ার উদ্দিনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মাথায় ও বাম হাতে আঘাতপ্রাপ্ত জুলেখা খাতুনকেও চিকিৎসা দেয়া হয়।
পরে রাতেই বাড়িতে ফিরে রাজারহাট থানায় ছেলের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে এনে এজাহার দায়ের করেন জুলেখা খাতুন। একদিন পর সোমবার দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে পয়ার উদ্দিন মারা যান। ওসি রাজু সরকার জানান, রাতেই নিহতের স্ত্রী জুলেখা খাতুন বাদী হয়ে রাজারহাট থানায় এজহার করলে তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে দাফনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।