বিশেষ প্রতিনিধিঃ রাজধানীসহ সারাদেশেই চাঁদাবাজি, মাদক, নিউজের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায়, নাম সর্বস্ব পত্রিকায় নিউজ করে মোটা অঙ্কের অর্থের মাধ্যমে তা মিটিয়ে ফেলাসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে কথিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে। যা প্রায়শই গণমাদধ্যমে সংবাদের শিরোনাম হয়। জাহিদুল ইসলাম জিহাদ নামের এমনি এক কথিত সাংবাদিক যার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। চাঁদাবাজি, নিউজের হুমকি দিয়ে মোটা অংকের অর্থ আদায়সহ এমন কোন অভিযোগ নেই যা তার বিরুদ্ধে নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম সারির ঠিকাদার লাভলী বেগমকে জড়িয়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রথমে ফেসবুক স্টাটাস এবং তাকে দেখে নিবেন এমন বিভিন্ন হুমকি স্বরূপ স্টাটাস দিয়ে পরবর্তিতে ময়মনসিংহ থেকে প্রকাশিত প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকায় গাজীপুর প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ প্রকাশ করে। যেখানে তাকে রাস্তার পিঠা বিক্রেতা, গার্মেন্টসে চাকরীসহ নানাবিধ মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে চাঁদা দাবি করে। অর্থ না পেয়ে পরবর্তীতে একই সংবাদ ঘুড়িয়ে পেঁচিয়ে পুনরায় তা প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী লাভলী বেগম তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় কথিত সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম জিহাদের বিরুদ্ধে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় ও পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে অভিযোগ করেন।

এ ব্যপারে লাভলী বেগম বলেন, আমি ও আমার স্বামীর বিরুদ্ধে ফেসবুক সাংবদিক জিহাদ আমাকে ও আমার স্বামীকে নানা ভাবে হেয়- প্রতিপন্ন করে সামাজিক ভাবে আমাদের সম্মানহানী করছে ও আমার ছবি ও বাড়ীর ছবি সংযুক্ত করে “লাগামহীন অবৈধ আয়ের উৎস” শিরোনামে প্রতিদিনের কাগজে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে। মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে সামাজিকভাবে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। আমি এর প্রতিকার চেয়ে স্ব- শরীরে উপস্থিত হয়ে সদর থানায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করি। তিনি আরও বলেন, এর আগেও আমার বিরুদ্ধে দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন ও দৈনিক বর্তমান কথা পত্রিকার আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তারা আমাদের সম্পর্কে সরজমিনে অনুসন্ধান করে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ কোন সত্যতা না পাওয়ায় পত্রিকা কৃর্তপক্ষ দুংখ প্রকাশ করে এর একটি প্রতিবাদ ছাপায়। এ ব্যপারে অভিযোগকারীর তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এস আই মোঃ আরিফ হোসেন এর জানান, আমি অভিযোগ হাতে পেয়েছি তাদের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুরের গাছা থানায় এই কথিত সাংবাদিক জিহাদের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধ শতাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। যার বেশির ভাগই চাঁদাবাজি, মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশসহ নানাবিধ কারণ। গাছা থানা সুত্র জানায়, কথিত সাংবাদিক জিহাদকে গাজীপুরের যারাই চিনেন তারা ফেসবুক সাংবাদিক হিসেবেই চিনেন। বাস্তবে তিনি কোন সাংবাদিক কিনা তা জানা নেই। তার বিরুদ্ধে প্রায়শই গাছা থানায় অভিযোগ দাখিল হয়। এ পর্যন্ত গাছা থানাতেই প্রায় ৩০টিরও বেশি অভিযোগ আছে কথিত সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম জিহাদের নামে। তবে গাজীপুর প্রেসক্লাব এবং জেলার বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক নেই এই কথিত সাংবাদিক জাহিদের সঙ্গে জানিয়েছেন জেলা প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ। তাদের ভাষ্য, সাংবাদিক পরিচয়ে যত ধরনের অপকরর্ম করা যায় জিহাদ তা করে বেড়াচ্ছে। যেহেতু গাজীপুরের কোন সাংবাদিক সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ততা নাই তাই তারা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এ বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মুক্তার হোসেন বলেন, এই নামে গাজীপুরে প্রকৃতপক্ষে কোন সাংবাদিক নেই। এই জিহাদ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে তিনি মুলত পরিচিত ফেসবুক সাংবাদিক। জানতে চাইলে গাজীপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলমগীর বলেন, জিহাদ মুলত গাজীপুরের কোন সাংবাদিকই না। তিনি হঠাৎ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৭ নং ওয়ার্ডে এসে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ে এহেন কোন অপকর্ম নাই যা করে বেড়াচ্ছে না। শুধু মাত্র গাছা থানাতেই তার বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধশত অভিযোগ রয়েছে ভুক্তিভোগীদের। আমাদের প্রেসক্লাবসহ গাজীপুরের কোন সাংবাদিক সংগঠনের সাথে তার সম্পর্ক না থাকায় আমরা তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারছি না। প্রশাসনের উচিত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। তবে কথিত সাংবাদিক জাহিদুল ইসলাম জিহাদ যে পত্রিকার পরিচয়ে গাজীপুরের এই অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন সেই প্রতিদিনের কাগজ কর্তপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।