রাজধানীতে এক তরুণীকে চার দিন আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিন আসামির দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তবে ডালিয়া আক্তার দিনা নামে এক নারীর রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া তিন আসামি হলেন- ওই তরুণীর প্রেমিক মনির হোসেন শুভ, বিল্লাল ওরফে আল আমিন এবং সুজন ওরফে সবুজ।

এরআগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লালবাগ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) খন্দকার মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন চার আসামিকে আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করলেও কৌশলে বিভিন্ন তথ্য গোপন করাসহ এড়িয়ে যাচ্ছে মর্মে প্রতীয়মান হয়তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে মর্মে তথ্য উপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে।

মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, ন্যায় বিচারের স্বার্থে সঠিক নাম-ঠিকানা যাচাইসহ ঘটনায় আসামিদের ভূমিকা নির্ণয় এবং মামলার মূল রহস্য উদঘাটন এবং এই ঘটনায় আর কোনো আসামি জড়িত কিনা জানার লক্ষ্যে রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থণা করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আসামি শুভর পক্ষে তার আইনজীবী ঢাকা বারের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হযরত আলী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। অপর আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

শুনানি শেষে আদালত তিন আসামি দুই দিনের রিমান্ড এবং এক আসামির রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিকে ওই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় তার বাবা ১৭ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে ওই তরুণীর বাবা হাজারীবাগের ঝাউচর এলাকায় বাস করেন। ৬ মাস পূর্বে তার মেয়ে ও শুভর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শুভ তাকে বিয়ের প্রস্তাবও দেয়। প্রায় এক মাস পূর্বে ওই তরুণী এবং মাকে রেখে তার বাবা গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী যান। চার দিন আগে ওই তরুণী গ্রামের বাড়ি যায়। তখন শুভ ওই তরুণীকে বিয়ে করবে বলে ফোনে জানায় এবং তাকে ঢাকায় আসতে বলে। ভাড়াবাবদ ৬৫০ টাকাও পাঠায়।

শুভর কথায় আশ্বস্ত হয়ে ওই তরুণী ১১ ফেব্রুয়ারি পটুয়াখালী থেকে রওনা হয়ে পরদিন ঢাকায় পৌঁছায়। সেখান থেকে শুভ ওই তরুণীকে নিয়ে লালবাগ বেড়িবাঁধ এলাকায় দিনার বাসায় নিয়ে যায়। দিনার সহায়তায় শুভ ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে।

১৪ ফেব্রুয়ারি শুভ ওই তরুণীকে বিল্লালের বাসা মুগদায় নিয়ে যায়। সেখানে শুভর উপস্থিতিতে বিল্লাল ও সুজন তরুণীকে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ১৬ ফেব্রুয়ারি বিল্লাল ওই তরুণীকে রিক্সায় করে টিএসসি এলাকায় নিয়ে আসে। তাকে একা রেখে চলে যায় বিল্লাল।