নজরুল ইসলাম, নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের নান্দাইলের শেরপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড শেরপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মো. শহীদুল্লাহ্ (৫০) কে গত ৯ এপ্রিল ভোরে কুপিয়ে হাত বিচ্ছিন্ন করে দেয় দূর্বৃত্তরা।
এ হামলা ঘটনায় নান্দাইল মডেল থানায় মামলা হলেও ৮ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামীরা ধরা পড়েনি। এ অবস্থায় শহীদুল্লাহর পরিবার আতঙ্কে দিন পার করছে। অন্যদিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ক্ষত বিক্ষত ও বিচ্ছিন্ন ডান হাত নিয়ে মৃত্যুশয্যায় কাতরাচ্ছে মো.শহীদুল্লাহ্।
নান্দাইল মডেল থানা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়ঃ মো.শহীদুল্লাহ্ সাথে তারই আপন ভাই শফিকুল ইসলাম (৪২) ও রফিকুল ইসলাম জাকারিয়া (৪০) সেচের পাম্প ও জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৯ এপ্রিল ভোরে বাড়ির পাশে মসজিদ থেকে ফজরের নামায পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই ভাইসহ আরো ৬-৭ জন ব্যক্তি শহীদুল্লাহ্ কে রামদা,কিরিশ ও দেশীয় অস্ত্রের মাধ্যমে কুপিয়ে হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম করে। শহীদুল্লাহর চিৎকারে আশে পাশের লোকজন ও তার পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়৷
রক্তাক্ত অবস্থায় মো. শহীদুল্লাহ কে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পরের দিন ১০ এপ্রিল শহীদুল্লাহর বড় মেয়ে মোছা .তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে নান্দাইল মডেল থানায় মৃত মফিজ উদ্দিনের পুত্র শফিকুল ইসলাম (৪২),রফিকুল ইসলাম(৪০),মৃত তৈয়ব আলীর পুত্র একরামুল হক(৩৮),নুরুল ইসলাম (৫০), মানিক মিয়া (৪২), মৃত ইছাম উদ্দিনের পুত্র হাদিকুল ইসলাম (৩২),মৃত শওকত মিয়ার পুত্র আবুএ কালাম (৩৫) ও মৃত আঃ আলীর পুত্র দুলাল মিয়া (৩৮) সহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন৷
মামলার ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও আসামী ধরা না পড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মামলার বাদী মোছা. তানিয়া আক্তার।আসামীরা মামলা প্রত্যাহার করতেও বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলেন অভিযোগ করেন মামলার বাদী ৷
এদিকে এই ঘটনায় গত মঙ্গলবার ১২ এপ্রিল রাতে অপারেশনের মাধ্যমে মো. শহীদুল্লাহর ডান হাতের কবজী সহ কেটে ফেলা হয়েছে৷ ডান পা ও বাম হাতের কবজিও কেটে ফেলার ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায় আছেন বলে শহীদুল্লাহর মেয়ে মো.তানিয়া আক্তারের জামাই মো.হেলাল উদ্দিন জানান।
সরেজমিনে শেরপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের উত্তর শেরপুর গ্রামে মো. শহীদুল্লাহ্ বাড়িতে গিয়ে দেখা বাড়িতে তিন মেয়ে ও স্ত্রী অবস্থান করছে। পরক্ষণেই আশে পাশের ২০-৩০ মানুষের জমায়েত হয়। ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্ত্রী রহিমা বেগম আহজারি শুরু করে। স্বামীকে নিঃসংশভাবে কুপানোর বর্ণনা দেন৷ তিনি বলেন,আমার স্বামীকে কুকুরের মত কুপিয়ে দুটি হাত,পা শরীরের কিছু রাখেনি। স্বামীর রক্তমাখা পাঞ্জাবি ও লুঙ্গি এনে দেখান।
তামান্না আক্তার বলেন, আমার বাবাকে যারা কুপিয়েছে তারা এখন আবার আমাদেরকে হুমকি দিচ্ছে। আমরা তিন বোন আর মা বাড়িতে আতঙ্ক আছি। বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের জীবনের নিরাপত্তা চাই।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে৷ অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে ঘরে তালা লাগানো অবস্থায় দেখা যায়।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, এ ঘটনায় শহীদুল্লাহর মেয়ে বাদী হয়ে মামলা করেছে। আসামী এখনও ধরা পড়েনি। তবে আসামী ধরার চেষ্টা করতেছি। আতঙ্কে বিষয়ে কোন অভিযোগ করেনি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।