এসএম তাজাম্মুল,মণিরামপুর প্রতিনিধি: যশোরের মণিরামপুরে উপজেলা প্রশাসন সহকারি কমিশনার(ভূমি) আলী হাসানের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আবারও শ্রী নদীতে মাছ ছাড়ার অভিযোগ উঠেছে।এমন কি এলাকাবাসির হয়ে অভিযোগকারী আতাউর রহমান সহ একাধিক স্থানীয়কে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে চলেছে সরকারি নদী দখলকারী একটি মহল।মণিরামপুর সহকারি কমিশনার(ভূমি) এর কাছে অভিযোগ করে ও তার কোন সুবিধা না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছে স্থানীয় জন সাধারন।
মণিরামপুর উপজেলার শ্যামনগর-কুশরীকোনার বুকচিরে বহমান শ্রীনদীকে দখলমুক্ত করতে এলাকাবাসীর পক্ষে স্থানীয় যুবক আতাউর রহমান ইতিপূর্বে শ্যামনগর গ্রামের মৃত নূর আলীর ছেলে শওকত গাইন ও বিপ্রকোনার রবিউল ইসলামের ছেলে সেলিম হোসেনকে অভিযুক্ত করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মণিরামপুর সহকারি কমিশনার ভূমি বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগটি আমলে নিয়ে চলতি মাসের ১২ই জুলাই দু পক্ষকেই সহকারি কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান নোটিশ প্রাদান করে ভূমি অফিসে ডেকে শ্রী নদীর সকল দখলদারকে তাদের স্থাপনা উচ্ছেদ ও দখলদারিত্ব করতে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।কিন্তু পরবর্তীতে সেলিম হোসেন ও শওকত গাইন নদীতে বিষক্রিয়া দিয়ে সাগরী শ্যাউলা মেরে সেখানে বাধ দিয়ে মাছের পোনা অবমুক্ত করেছেন বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় যুবক আতাউর রহমান সাধারন জনগনকে সাথে নিয়ে দখলদারদের বিপক্ষ হয়ে গণস্বাক্ষর সম্বলিত আরো একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মণিরামপুর সহকারি কমিশনার ভূমি আলী হাসান বরাবর।
উল্লেখ্য অভিযোগ সূত্রে জানা যায় প্রায় বিলুপ্তির পথে শ্রীনদীটি দীর্ঘকাল যাবত পাশ দিয়ে অবস্থিত জনসাধারণ বিভিন্নভাবে দখল করে আছে। কিছুটা অংশ জলাশয় থাকায় স্থানীয় দরিদ্র এলাকাবাসী যে যার মত মাছ ধরে থাকে। হঠাৎ স্থানীয় শ্যামনগর গ্রামের মৃত নুর আলী গাইনের ছেলে মোঃ শওকত গাইন ও বিপ্রকোনা গ্রামের মৃত রহিম বক্স মোল্লার ছেলে মো: নিছার আলী ও রবিউল ইসলামের ছেলে সেলিম হোসেন সহ স্থানীয় একটি প্রভাবশালী কুচক্রিমহল শ্রীনদীর উন্মুক্ত জলাশয় জোরপূর্বক দখলের পায়তারা চালাচ্ছিলো একটি মহল।
এ ব্যাপারে উক্ত সরকারি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ শ্রীনদীর উন্মুক্ত জলাশয় যাতে জোর দখল পূর্বক মুষ্টিমেয় কিছু লোকের আওতায় না থাকে তার জন্য জোর দাবি জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার(ভূমি) বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় যুবক আতাউর রহমান।
মণিরামপুর সহকারি কমিশনার (ভূমি) আলী হোসেন বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযোগকারী ও দখলদারদের নোটিস প্রদান করেন।গত ১২ই জুলাই (বুধবার) নোটিশের আলোকে দু’পক্ষ ভূমি অফিসে আসলে তাদের নিয়ে মিটিং করে পরবর্তীতে ঐ নদীতে কোন দখলদার আর দখলদারিত্ব করতে পারবেননা বলে জানিয়েদেন সহকারি কমিশনার ভূমি আলী হোসেন।
সরেজমিনে গেলে স্থানীয় মুনসুর আলী বলেন,এই নদীতে আমরা বংশপরম্পরায় মাছ ধরি,সাগরী শ্যাউলা নিয়ে গবাদিপশুকে খাওয়ায় আবার অনেকে এখান থেকে মাছ মেরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।কিন্তু এখানে যদি মাছ চাষ করে তাহলে আমরা এই নদীতে আর আসতেও পারবো না,মাছও ধরতে পারবোনা।
এ ব্যাপারে দখলকারি সেলিম হোসেন সত্যতা স্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন,এখানে আমরা না অনেকেই নদী দকল করে খাচ্ছে।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পুনরায় নদী দখলকারীদের দৌরাত্বে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে স্থানীয়দের সাথে নিয়ে গণস্বাক্ষর সম্বলিত আরো একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছেন মণিরামপুর সহকারি কমিশনার ভূমি আলী হাসান বরাবর।
এ ব্যাপারে মণিরামপুর সহকারি কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান জানান,শ্রী নদী দখলের বিষয়ে তদন্ত চলছে।সরকারি নদী কারো পৈতৃক সম্পত্তি নই,দখলকারি যেই হোক প্রমান মিললে তাকে আইনের আয়োতায় আনা হবে।
এ ব্যপারে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন জানান,সরকারি সম্পত্তি কেউ দখল করার ক্ষমতা রাখেনা।এ বিষয়ে তদম্ত চলছে,দোষীদের আইনের আওতাই আনা হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।