নড়াইলের কালিয়া থানার এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ছাকিব শেখ (১৭) নামে এক তরুণের পকেটে জোর করে ইয়াবা দিয়ে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে মিথ্যা মামালায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ভুক্তভোগী ছাকিব শেখ কালিয়া উপজেলার হাচলা গ্রামের তবিবুর রহমান শেখের ছেলে।

একই সঙ্গে ওই যুবকের কাছে পুনরায় টাকা দাবি করলে তা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শারীরিকভাবে নির্যাতনসহ তার কলেজপড়ুয়া বোনদের প্রতি কুদৃষ্টি দিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী তরুণের মা।

রোববার (৮ জানুয়ারি) সকালে নড়াইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ অভিযোগের তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগকারী ওই যুবকের মা মোসা. খাদিজা বেগম।

লিখিত অভিযোগে খাদিজা বেগম জানান, তিনি উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের হাচলা গ্রামের নবগঙ্গা নদীর পশ্চিমপারের ওয়াপদা বেড়িবাঁধের ওপর খুপরি ঘরে স্বামী, কলেজপড়ুয়া দুই কন্যা ও দুই পুত্রসন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। কালিয়া থানার এএসআই অমিত কুমার মণ্ডল দিনে কিংবা রাতে নানা অজুহাতে ওই বাড়িতে যাতায়াত করে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় ৭-৮ মাস আগে রাত আনুমানিক ১টার দিকে বড় ছেলে ছাকিব শেখের পকেটে জোর করে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেন এএসআই অমিত। পরে তাকে মিথ্যা মামালায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবি করা হয়। সেই মুহূর্তে তাদের কাছে নগদ টাকা না থাকায় ওই রাতেই ব্যাপারী ডেকে এনে গোয়ালে থাকা হালের গরু বিক্রি করে ১২ হাজার টাকা এএসআই অমিতকে উৎকোচ দিয়ে রক্ষা পায় পরিবারটি।

তিনি আরও জানান, শুধু তাই নয়, সর্বশেষ গত ১৯ ডিসেম্বর এএসআই অমিত আবারো উপজেলার শুক্তগ্রাম বাজার থেকে ছাকিব শেখকে আটক করে টাকা দাবি করলে তিনি তা দিতে অস্বীকার করলে তাকে চড়-থাপ্পড় ও লাথিসহ শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এরপর তাদের বাড়িতে নিয়ে তার পরিবারের লোকজনের সামনে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকেন। একপর্যায় তাকে মাদক বিক্রেতা বানানোর চেষ্টা করাসহ তার কলেজপড়ুয়া বোনদের প্রতি কুদৃষ্টি দেন এএসআই অমিত।

খাদিজা বেগম জানান, ছেলে বাবার সঙ্গে কৃষিকাজের সহযোগিতা করে। তার পকেটে জোরপূর্বক মাদক ঢুকিয়ে নাটক সাজিয়ে হয়রানি করেছেন বলে উল্লেখ করে তার ছেলেকে নির্দোষ দাবি করেন তিনি। বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

এ বিষয়ে এএসআই অমিত কুমার মণ্ডল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অযথা হয়রানিমূলক অভিযোগ করেছেন। আদৌ তাদের অভিযোগ সত্য নয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

কালিয়া থানার ওসি শেখ তাসমীম আলম যুগান্তরকে জানান, এ বিষয় আমি অফিসিয়ালভাবে কিছুই জানি না । তবে অমিত কুমার মণ্ডলের বদলি হয়ে গেছে বলে আমি জেনেছি।

নড়াইলের পুলিশ সুপার মোসা. সাদিয়া খাতুনের নিকট এ প্রসঙ্গে মতামত জানতে বারবার তার মোবাইল ফোনে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।