নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা জোনাল অফিস যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর আওতাভুক্ত অফিসে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি ও মিটার টেম্পারিংয়ের নামে টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া উঠেছে।
গ্রাহক সূত্রে জানা যায় যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এই অফিসের ডিজিএম ও জুনিয়র ইন্জিনিয়ার তাদের কিছু দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত গ্রাহকদের বোকা বানিয়ে মিটার টেম্পারিং কথা বলে মিটার খুলে এনে ১/২ মাস পরে গ্রাহকদের নোটিশ করে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ডেকে এনে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে লোহাগড়া সিকদার হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ইব্রাহিম বলেন, আমার হাসপাতালে লক্ষীপাশা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার মাহাফুজুর রহমান বলেন আপনার ৬ টি মিটারের মধ্যে ৫ মিটারে সমস্যা আছে এই বলে ৫ টি মিটার খুলে নিয়ে যায়। এবং ১৮ দিন পর উক্ত অফিসে যাওয়ার জন্য একটি নোটিশ পাই। তারই পেক্ষাপটে আমি অফিসে উপস্থিত হলে ডিজিএম ও ইঞ্জিনিয়ার বলেন আপনি ১৮ লক্ষ টাকার বিদ্যুৎ চুরি করেছেন? যদি আপনি এই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করেন তাহলে আপনার নামে মামলা করা হবে।
তার কিছুক্ষণের মধ্যে অফিস থেকে বের হলেই ডিজিএম ও ইঞ্জিনিয়ার এর কিছু দালাল এসে আমাকে বলে ভাই আপনার সমস্যা টা কি? তখন আমার বিষয়টি খুলে বললে তারা বলেন ডিজিএম ও ইঞ্জিনিয়ার আমার খুব কাছের মানুষ। আপনার তো এ টাকা দিতে ই হবে, না দিলে মামলা খাবেন।
আর পল্লী বিদ্যুৎএর মামলা তো জানেনই ।
এ ভাবে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৮ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকায় নিয়ে আসে সেটা ও আমি অপারগতা জানালে ৮ লক্ষ টাকায় নিয়ে আসে, পরবর্তীতে দালালচক্র এবং ডিজিএম ও ইঞ্জিনিয়ারের সমন্বয়ে ৬ লক্ষ টাকায় সমাধান করা হয়। ৬ লক্ষ-টাকা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা দিলেও আমাকে ৫ লক্ষ টাকার একটি রশিদ দেওয়া হয়।
এমন ভাবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ক্লিনিক মালিকদের কাছ থেকে এ রুপ অভিযোগ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে ইব্রাহিম সাংবাদিকদের কাছে বলেন মিটার টেম্পারিং এর নামে ৬ লক্ষ টাকা দিতে গিয়ে আমি হয়েছি দিশেহারা, হারিয়েছি আমার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তাদের এই মিটার টেম্পারিং এর মায়াজালে পড়ে আমার মতো আরো অনেক ব্যবসায়ী হয়েছে দিশেহারা।
আরো জানা যায়, ডিজিএম ও ইঞ্জিনিয়ার ২ জনের যোগসূত্রে ভূয়া মিটার টেম্পারিং এর নামে সাধারণ মানুষকে নিঃস্ব করে প্রায় ১ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে হাতিয়ে নিয়ে ৫৮ লক্ষ টাকা পল্লী বিদ্যুৎ অফিস তহবিলের কোষাগারে জমা করে বাহা বাহ পেয়েছেন। লক্ষীপাশা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ইন্জিনিয়ার ও ডিজিএম এর দূর্নীতির কারনে লোহাগড়ার মানুষের ভগান্তির শেষ নেই।
কৃষকদের জমিতে পানি দেওয়ার জন্য শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দেওয়ার জন্য বিল অঞ্চলের জন্য ইলেকট্রিক খুঁটির আবেদন করেও না পেয়ে, বাঁশের খুঁটি দিয়ে ১ হাজার ১২ শো মিটার পর্যন্ত তার টানিয়ে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ টি মিটার লাগানো হয়েছে। ওখান থেকে ও ইন্জিনিয়ার ও ডিজিএম পাই বাড়তি মুনাফা, এবং সাধারণ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কে মাইনকার চিপায় ফেলে হাতিয়ে নেয় হাজার হাজার টাকা।
বিদ্যুৎ ভুক্তভোগীদের মধ্যে এক শ্রেণীর মানুষ আছে তাদের কাছ থেকে মাসুরা নিয়ে তাদের বিদ্যুৎ লাইন দন্ডায়মান রাখে। আর যাহারা মাসুরা দিতে না পারে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ ভুক্তভোগী একজন গ্রাহক বলেন বাতির নিচে অন্ধকার, কিছূই করার নাই। অবশেষে লোহাগড়ার মানুষ ওই ডিজিএম ও ইঞ্জিনিয়ারের অপসারণের জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে লক্ষীপাশা জোনাল অফিস যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর ডিজিএম এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করেন।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখবো ব্যবস্থা নিব।
এবিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজগর আলী”র সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন এবিষয়ে পল্লী বিদুৎ এর উদ্ধতম কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিবেন।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।