হাবিবুর রহমান, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের চিলমারীতে প্রতিবেশির দায়ের কোপে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি এখন শাহেরা বেগম।
চিলমারী থানা এজাহার সূত্রে জানাযায়, রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মোঃ মতিয়ার রহমানের স্ত্রী সাহেরা বেগমের সাথে পাশের বাড়ির ফেরদৌস(পানাতির) পরিবারের দীর্ঘদিন থেকে পারিবারিক ভাবে দ্বন্দ চলে আসছে। এরই জের ধরে ফেরদৌস (পানাতির) স্ত্রী মর্জিনা বেগমের সাথে গত ১৬-১১-২০২২ তারিখে বিকাল ৪ টার সময়, মতিয়ার রহমানের গরুর বাছুর ফেরদৌস (পানাতির) বাড়িতে গেলে, ফেরদৌস (পানাতির) স্ত্রী মর্জিনা বেগম, সাহেরা বেগম কে অনেক খারাপ ভাষায় গালি-গালাজ করতে থাকেন। এতে সাহেরা বেগম আসামীদের গালি-গালাজ করিতে বাধা নিষেধ করিলে, তারা আর ও উত্তেজিত হয়ে পুর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক দলবদ্ধ হয়ে, হাতে লাঠি-সোটা, ধারালো দা, ছোরা, বটি, বেকি, লোহার রড় নিয়ে সাহেরা বেগমের বাড়িতে আক্রমন করেন। তারা সাহেরা বেগমের চৌচালা টিনের ঘরটি ভাংচুর করেন। ঐ সময় শাহেরা বেগম তাদেরকে বাধা দিতে গেলে আসামিগন তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করেন। এতে করে সাহেরা বেগমের বাম পা গুরুতর ভাবে জখম হয়। এবং আসামীর হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে মুখে স্বজোরে ঢিকা মারিলে, ৩টি দাঁত ভাঙ্গীয়া গুরুত ভাবে রক্তাক্ত হয়। এবং তার কানে থাকা ৪ আনা ওজনের সোনার দুল, যার মূল্য ১৮০০০ হাজার টাকা, কান হইতে খুলিয়া নেয়। এক পর্যায়ে আসামীগন সাহেরা বেগমের পড়নের কাপড় টানা-হেঁচড়া করতঃ বিবস্ত্র করিয়া শ্লীলতাহানি ঘটায়। এ ব্যাপারে চিলমারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, মামলা নং- ৩, তারিখ-১৯-১১-২০২২।
এ ব্যাপারে সাহেরা বেগমের মেয়ে মিতু আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের গরুর বাছুর ফেরদৌস পানাতির বাড়ীতে গেলে, তার স্ত্রী মর্জিনা বেগম আমাদের কে অনেক খারাপ ভাষায় গালি-গালাজ করেন। এবং এক পর্যায়ে মর্জিনা বেগম ছেলে তারেক কে দা নিয়ে আসতে বলেন। তখন আমরা ভয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকি। পরে তারেক দরজা ধাক্কা দিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে, আমার মাকে জড়াইয়া ধরে। আর ওবায়দুল মায়ের পায়ে দা দিয়ে চোট মারে ও মুখ খুব জোরে চিপে ধরেন। এবং তারেক মায়ের পড়নের মেস্কী ছিড়ে ফেলেন। আমি মাকে বাঁচাতে গেলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে এলাকাবাসীরা এসে মাকে চিলমারী হাসপাতালে ভর্তি করাতে নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী ২ জন বলেন, এর আগে ও ফেরদৌস পানাতি পরিবারের সাথে সাহেরা বেগমের দ্বন্দ্ব হয়েছিল। মেম্বার ও এলাকাবাসীরা মিলে মিটিং করা হয়েছে। এদের কোন লোক বাড়িতে থাকে না তাই ওরা বার বার দ্বন্দ্ব তৈরি করে।
এ নিয়ে ফেরদৌস পানাতির স্ত্রী মর্জিনা বেগমের সাথে কথা হল তিনি বলেন, সাহেরার গরুর বাছুর, প্রায় দিন আমাদের ক্ষতি করে। সেই দিনে ও ক্ষতি করেন। তাদেরকে বাছুরের কথা বলায় মিতু ও তার মা আমাকে অনেক খারাপ ভাষায় গালি-গালাজ করেন। এবং বাড়িতে এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
দা দিয়ে চোট মারার বিষয়ে জানতে চাইলে মর্জিনা বেগম বলেন, আমকে যখন মিতু ও তার মা খারাপ ভাষায় গালি দিতে ছিল তখন আমার ছেলে তারেক দা দিয়ে সাহেরার পায়ে চোট মারে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে ঐ এলাকার মেম্বার মোঃ রায়হানুল ইসলাম বিজু সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনার সময় আমি কেডি ওয়ারী স্কুলের পাশে ছিলাম, তখন দেখি সবাই দৌড়া-দৌড়া করছেন, জানতে চাইলে একজন বলেন মারামারি লেগেছে, তখন আমি দেখি সাহেরা বেগম কে অটোতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এবং দেখি আহত সাহেরা বেগমের পা দিয়ে ও মুখ দিয়ে অনেক রক্ত বের হচ্ছে। তখন আমাকে এলাকার বাসীরা এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন। এবং আমি তাকে হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠাই। তিনি আর ও জানান তদন্ত মূলক সঠিক বিচার করা হোক।
এ ব্যাপারে চিলমারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আতিকুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলা করা হয়েছে। এবং এই মামলার আয়ু এসআই মোঃ সাহেব আলীকে ভালো ভাবে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।