কুমিল্লা সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুবর্ণপুর গ্রামে রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে খুন হন পল্লী চিকিৎসক সৈয়দ বিলাল হোসেন (৭৫) ও তার স্ত্রী সফুরা বেগম (৫৫)। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত দম্পতির প্রবাসী ছেলে সৈয়দ আমান উল্লার স্ত্রী নাজমুন নাহার চৌধুরী ওরফে শিউলী (২৫) এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছেন। তিনিই হত্যার পরিকল্পনাকারী। ইতোমধ্যেই কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এ ঘটনায় শিউলিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা জেলা পুলিশ এসব তথ্য জানিয়েছে। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) কাজী আবদুর রহিম। এ সময় জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে কাজী আবদুর রহিম বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে পুত্রবধূ শিউলি তার শ্বশুর-শাশুড়িকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

হত্যাকাণ্ডের দিন শিউলি কুমিল্লা শহরে বসবাসরত তার খালাতো ভাই জহিরুল ইসলাম সানিকে তার কয়েকজন বন্ধু নিয়ে আসতে বলে। রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে সানি তার বন্ধু মেহেদী হাসান তুহিনকে নিয়ে শিউলির পরিকল্পনায় সেখানে গেলে সে ঘরের দরজা খুলে দেয়। প্রথমে শিউলি তার ওড়না দিয়ে শাশুড়ি সফুরা বেগমের মুখ চেপে ধরে। এ সময় সানি ও তুহিন হাত-পা বেঁধে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এর কিছুক্ষণ পরে শিউলির শ্বশুর বাড়ি এলে তাকেও একই কায়দায় হত্যা করা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের পর শিউলি নিজেকে বাঁচাতে ডাকাতির নাটক সাজায়। কুমিল্লা কোতোয়ালি থানা ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা প্রথমে শিউলিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কুমিল্লা শহর থেকে আসামি সানি এবং বরুড়া থেকে আসামি তুহিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন শিউলি। উল্লেখ্য, রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের সুবর্ণপুর গ্রামের মীর বাড়ির নিজ ঘর থেকে ওই দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পরদিন সকালে নিহত দম্পতির মেয়ে সৈয়দা বিলকিস আক্তার কোতোয়ালি মডেল থানায় শিউলিকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়। নিহতদের মেয়ে বিলকিস বলেন, আমান বড় ভাইয়ের স্ত্রী শিউলি বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। তিনি খুনিদের ফাঁসির দাবি করেন।