চেতনা নাশক ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণের পর সেই ঘটনার ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে মাদারীপুরে এক গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক দন্ত্য চিকিৎসক ও তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে।

ঘুমের ওষুধ খাইয়ে গৃহবধূর গোপন ভিডিও ধারণ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে পর্যায়ক্রমে ৬ মাস ধরে ধর্ষণ করে আসছে অভিযুক্তরা। শুধু ধর্ষণই নয়, ওই নারীর কাছ থেকে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ২০হাজার টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে তারা।

বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় প্রভাবশালীদের হুমকিতে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না ভুক্তভোগীর পরিবার। থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, তবে তিন দিনেও মামলা রেকর্ড হয়নি। গ্রেপ্তার হয়নি আসামি।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সেবা ওরাল অ‌্যান্ড ডেন্টাল কেয়ারে চিকিৎসার জন্য যান ওই গৃহবধূ। এসময় প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক ছায়েদুল হক কিরণ ওই গৃহবধূকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করেন। কিরণ সে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখে বলে অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূ।

পরে সেই ভিডিও কিরনের বন্ধু মেহেদী হাসান শিকদার ও সোহাগ মিয়াকে দিলে তারা ফেসবুকে আপলোড করার ভয় দেখিয়ে পর্যায়েক্রমে গত ৬ মাস ধরে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে আসছে। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না ভুক্তভোগীর পরিবার। দফায় দফায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, ‘আমি চিকিৎসার জন্য ডাক্তার কিরণের কাছে যাই। এসময় তিনি আমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে ধর্ষণ করে। সে ঘটনা ভিডিওতে ধারণ করে রাখে। পরে সেই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে একাধিক বার আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারিরীক সম্পর্ক করে। এভাবে বেশ কিছুদিন নির্যাতনের পর তার বন্ধু হাসান ও সোহাগকে সেই ভিডিওটি দেন কিরণ। এরপর হাসান এবং সোহাগ সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আমার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করে। এছাড়াও সোহাগ একবার ভিডিও ডিলেট করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আমার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকাও নেয়। কিন্তু ভিডিও ডিলেট করেনি। উল্টো আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বার বার ধর্ষণ করে।’

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘একজন নারীকে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে একাধিক বার ধর্ষণ করে। রাষ্ট্রের উচিত এই অসহয় নারীর পাশে দাঁড়ানো। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো নিরাপত্তহীনতায় রয়েছেন ওই নারী। ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তায় পুলিশের ভূমিকাও রহস্যময়।’

কালকিনি থানার ওসি ইশতিয়াক আশফাক রাসেল বলেন, ‘ছয় মাস আগের ঘটনা। জানাজানি হওয়ার পর অভিযুক্তরা পালিয়েছে। তবে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’