মোঃ ফারুক হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধিঃ খাগড়াছড়ি জেলাধীন মাটিরাঙ্গায় ব্যবসায়ী আবুল বাশার হত্যাকান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে গ্রেফতারকৃত দুই খুনি আব্দুস সালাম(২৪) ও আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগর(১৭)। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে খুনি সাগর ও সালাম। (২জুন)বুধবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে এ তথ্য দেন খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ।
মূলত পাওনা টাকা সারে তিনলক্ষ টাকা চাইতে গিয়ে নির্মমভাবে খুন হন ব্যবসায়ী আবুল বাঁশার। হত্যার পরে আবুল বাঁশারের লাশ গুম করার চেষ্টা করেন বলে জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ। আবুল বাঁশার নিখোঁজের পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন যায়গায় অনেক খোঁজাখুঁজির পর এক পর্যায়ে ২৮শে মে আবুল বাঁশারের বসত বাড়ির নিকটবর্তী পাঞ্জাবি টিলাস্থ প্রায় এক কিলোমিটার দূরে জনৈক ইউনুছ মোল্লার লোংগা জমি থেকে আবুল বাঁশারের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ২৮শে মে রোজ শুক্রবার আবুল বাঁশারের ছোট ভাই আবুল কালাম অজ্ঞাত ব্যক্তীদের আসামি করে মাটিরাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, ঘটনার খবর পাওয়ার অব্যবহিত পরেই আধুনিক তদন্ত পদ্ধতি ও বিশ্বস্থ গুপ্তচর নিয়োগ করতঃ পুলিশ সুপার খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনায় মাটিরাঙ্গা থানা পুলিশের ব্যবস্থাপনায় খুনের ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামী আবদুস সালাম(২৪) ও আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগর(১৭)কে (৩১শে মে) রোজ সোমবার মাটিরাঙ্গা থানাধীন খেদাছড়া এলাকা হতে গ্রেফতার ও আসামীদ্বয়ের দেখানো সনাক্তমতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত খুনের কাজে ব্যবহৃত লাঠি, দা,কাঠের বল্লি ইত্যাদি উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ জানান, কয়েকমাস আগে ব্যবসায়ী মোঃ আবুল বাঁশারের কাছ থেকে ব্যবসা করার কথা বলে সারে তিনলক্ষ টাকা ধার নেয় প্রতিবেশী আব্দুস সালাম। বেশ কয়েকমাস পার হওয়ার পরেও টাকা ফেরত না দেওয়ায় দুজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আবুল বাঁশারকে গল্প করার কথা বলে নিজের মুরগীর খামারে ডেকে নেয় আব্দুস সালাম। পরে এক পর্যায়ে নিজের পাওনা সারে তিনলক্ষ টাকা চাইলে আবুল বাঁশারের সাথে কথা কাটাকাটি হয় আব্দুস সালামের। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আব্দুস সালাম প্রথমে লাঠি দিয়ে আবুল বাঁশারের মাথায় আঘাত করে। পরে গলায় দরি পেচিয়ে দরে,এরপর অপর সহযোগী আনোয়ার হোসেন ওরফে সাগরের সহযোগিতায় কাঠের বল্লিতে হাত-পা বেঁধে ঝুলিয়ে মূল ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার উত্তরে নিহত আবুল বাঁশারের বাড়ির পার্শ্বে নিচু জায়গা লোংগাতে ফেলে লাশের পাশে সিগারেটের কয়েকটি টুকরা পেলে তাঁর মাথায় দা এর উল্টা পিঠ দিয়ে ২টি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ গুম করে একই পথ ধরে পূনরায় ঐ মুরগীর খামারে ফিরে এসে নিহত বাঁশারের লুঙ্গি, লাশ বহনে ব্যবহৃত রশি ও নিহত আবুল বাঁশারের ব্যবহৃত সেন্ডেল জুতা পুড়িয়ে আলামত ধ্বংস করে এবং নিজেদের আড়াল করার হীন উদ্দেশ্যে তাঁর মোবাইল, মানিব্যাগ ও চাবি নিহত আবুল বাঁশারের বাড়ির প্রবেশ পথে রেখে আসার বিষয়ে স্ববিস্তারে বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি প্রদান করে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, নিজেদের আড়াল করতে আবুল বাঁশারের লাশ উদ্ধার, ময়না তদন্ত ও জানাযায়ও অংশ নেয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।