বিপুল কুমার দাস রাজৈর প্রতিনিধি:মাদারীপুরের রাজৈরে চিকিৎসার অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে উপজেলার টেকেরহাট সেফ ডেলিভারি হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সোমবার রাত ১২টার দিকে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী হসপাতালটি ঘেরাও করে রাখেন।

পরে খবর পেয়ে রাজৈর থানার ওসি শেখ সাদিক ও রাজৈর-শিবচর এসপি সার্কেল আনিসুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে বিচারের আশ্বাস দিলে ভুক্তভোগীরা চলে যান। তবে ঘটনাটি প্রভাবশালী মহল ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

প্রসূতি জেসমিন বেগমের স্বামী রাকিব জানান, আমার স্ত্রী জেসমিন বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে রোববার রাত ৯টার দিকে টেকেরহাট সেফ ডেলিভারি হসপিটাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাই। সেখানে ৮ হাজার ৪০০ টাকা চুক্তিতে ভর্তি করা হয়।

পরে ওই রাত ১টার দিকে চিকিৎসক হাফিজা আক্তার রত্না ও তার স্বামী মিলে প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি সম্পন্ন করেন। এ সময় আমার বাচ্চার শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দিলে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে সোমবার বেলা ১২টার দিকে আমাদের হসপিটাল থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। পরে আমার বাচ্চা ওই রাত ১০টার দিকে মারা যায়।

তিনি আরও জানান, ওই হসপিটালে কোনো ডাক্তার ছিল না। আমার বাচ্চার মৃত্যুর বিচার চাই।

চিকিৎসক হাফিজা আক্তার রত্না জানান, নবজাতক শিশুটি সুস্থ অবস্থায় বাড়ি নিয়ে গেছে। হয়ত ঠিকমতো ওষুধ খাওয়াতে ভুল করায় শিশুটির মৃত্য হয়ে থাকতে পারে। তবে মীমাংসার কথাবার্তা চলছে।

হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন হাওলাদার জানান, ঘটনা জেনেছি। ডাক্তার ছাড়া প্রসূতির ডেলিভারি করানো কাম্য নয়।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ওসি শেখ সাদিক জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন ডা. মনির আহমদ খান জানান, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অপ্রশিক্ষিত বা সনদবিহীন ব্যক্তি এ কাজ করে থাকলে তদন্তসাপেক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, টেকেরহাট বন্দরসসহ রাজৈর উপজেলা মোট ২৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল রয়েছে। ২-১টা ছাড়া এই ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালগুলোতে কাগজে-কলমে নিয়োগ দেওয়া থাকলেও সার্বক্ষণিক এমবিবিএস ডাক্তার বা ডিএমএফ অথবা এলএমপি পল্লী চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্স থাকে না। অথচ হসপাতাল চালু করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের লাইসেন্স দিয়েছে।